সর্বশেষ:

meyake bachate dare dare ghurchen brikkho premik siddik

মেয়েকে বাঁচাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে পাইকগাছার বৃক্ষ প্রেমিক সিদ্দিক গাজী

meyake bachate dare dare ghurchen brikkho premik siddik
Facebook
Twitter
LinkedIn

পাইকগাছা ( খুলনা ) প্রতিনিধি

মানুষ মানুষের জন্য, জীবন তো জীবনেরই জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারেনা! হ্যা সহানুভূতি পেতেই পারে। আর তাই ভূপেন হাজারিকার বিখ্যাত এ কালজয়ী গানটির কথা স্মরণ করিয়ে একজন সংকটাপন্ন হতদরিদ্র মানুষের স্কুল পড়ুয়া মেয়ের চিকৎসায় এ মানবিক প্রতিবেদন।

খুলনার পাইকগাছার বৃক্ষ প্রেমিক সিদ্দিক গাজী (৬৯)। উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের মৃত বেলায়েত গাজীর ছেলে। যদিও এলাকায় সবাই তাকে চেনেন বকুল সিদ্দিক নামে। দারিদ্রতা নিত্য সঙ্গী হলেও ১৯৮৫ সাল থেকে শুরু করে অদ্যাবধি খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা সহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় পায়ে হেটে ঘুরে ঘুরে সরকারী-বেসরকারী বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনসহ নানা প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২ হাজারেরও বেশি বকুলের চারা রোপন করেছেন তিনি। এনিয়ে বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বকুল গাছ নিয়ে বিটিভি”র জনপ্রিয় “ইত্যাদি অনুষ্ঠানে তার একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করে এবং ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হয়। সে অর্থও তিনি ব্যয় করেছিলেন মানবতার কল্যাণে বৃক্ষ রোপনে।

সর্বশেষ দারিদ্রতাকে নিত্য সঙ্গীকরে দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন বিল থেকে বিরগুণি শাক সহ নানা রকমের শাক সংগ্রহ করে কপিলমুনি বাজার সহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে সেগুলো বিক্রির টাকায় নানা সংকটেও বেশ কাটছিল তার জীবন। তবে স্বল্প সুখই যেন সইলোনা তার।

কয়েকদিন আগে তার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে খাঁদিজা অসুস্থ্য হলে চিকিৎসার জন্য তাকে ডাক্তারের কাছে নিলে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়ে। ফলে অপারেশন সহ ওষুধের খরচ বাবদ ১৪-১৫ হাজার টাকার কথা জানায় চিকিৎসকরা। এর পর কয়েকদিন যাবত মেয়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন হতদরিদ্র একজন মানবিক মানুষ সিদ্দিক গাজী।

বৃক্ষ প্রেমিক সিদ্দিক গাজী জানান, বিল থেকে সংগৃহীত শাক বিক্রির টাকায় নানা সংকটেও কোন রকম খেয়ে না খেয়ে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে চলছিলেন তিনি। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে তার ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে খাঁদিজার অ্যাপেন্ডিসাইটিস ধরা পড়ে। এর পর থেকে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে মেয়ের চিকিৎসায় সাহায্যের আবেদন জানিয়ে ৩ হাজার টাকা জোগাড় করেছেন তিনি। বাকি টাকার অভাবে মেয়ের চিকিৎসা করাতে ব্যার্থ হয়েই সকলের দারস্থ হয়েছেন। তাই সকলের সামর্থ অনুযায়ী সহায়তার আবেদন জানান তিনি। হতদরিদ্র সিদ্দিককে সহায়তায় তার ব্যবহৃত নম্বর ০১৯৫৬৬৩৯৭৬৭ (নগদ-বিকাশ পার্সোনাল)।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সাল থেকে শুরু করে খুলনা,যশোর, সাতক্ষীরা সহ আশপাশের কয়েকটি জেলায় অদ্যাবধি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রায় ১২ হাজারেও বেশি বকুলের চারা রোপন করেছেন তিনি। প্রথমে তিনি বিভিন্ন নার্সারী থেকে চারা কিনে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে রোপন করতেন। এরপর ১৯৯০ সালে তিনি ১০ কাঠা জমিতে নার্সারী গড়ে তোলেন। যদিও এলাকার লোকজন নার্সারীটি নষ্ট করে দেয়। এরপর আবারও অন্যের জমি ইজারা নিয়ে নার্সারী গড়ে তোলেন। ১৯৯০ সালে তৎকালীন ইউএনও মিহির কান্তি মজুমদার তাকে কপিলমুনি কলেজে মালি পদে চাকুরি দেয়। এ চাকুরি প্রত্যাখ্যান করে বকুলের চারা লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন সিদ্দিক গাজী। ২০১৫ সালে বকুল গাছ নিয়ে বিটিভি”র জনপ্রিয় “ইত্যাদি অনুষ্ঠানে তার একটি সাক্ষাৎকার প্রচার করে এবং ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হয়।

বর্তমানে বিভিন্ন বিল থেকে বিরগুণি শাক সহ নানা রকমের শাক সংগ্রহ করে উপজেলার বিভিন্ন বাজার সহ বিভিন্ন গ্রামে সেগুলো বিক্রি করে তিনি জীবীকা নির্বাহ করে থাকেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana