সর্বশেষ:

মেডিকেলের ভর্তির প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার

মেডিকেলের ভর্তির প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে অভিভাবক ও শিক্ষার্থী গ্রেফতার

মেডিকেলের ভর্তির প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতার
Facebook
Twitter
LinkedIn

ডেস্ক রিপোর্ট :
মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের তদন্তে এবার অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের তথ্যও বেরিয়ে আসছে। সবশেষ এক অভিভাবককে গ্রেফতার করা হয়েছে, যিনি টাকার বিনিময়ে নিজের সন্তানদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন ফাঁস হওয়া প্রশ্ন। এছাড়া এমন চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে সুযোগ পেয়ে রীতিমতো পাস করে চিকিৎসক বনে গেছেন। মেডিকেলের প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় স¤প্রতি চলমান অভিযানে সর্বশেষ ৭ জনকে গ্রেফতার।

অভিভাবক হিসেবে সন্তানের হাতে ফাঁসহওয়া প্রশ্ন তুলে দেওয়ার দায়ে যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা মাকসুদা আক্তার মালা (৫২)। গ্রেফতার বাকিরা হলেন ডাঃ কে এম বশিরুল হক (৪৮), ডাঃ অনিমেষ কুমার কুন্ডু (৩৩), জাকিয়া ফারইভা ইভানা (৩৫), সাবরিনা নুসরাত রেজা টুসী (২৫), জাকারিয়া আশরাফ (২৬) ও মৈত্রী সাহা (২৭)। সিআইডি জানায়,

গত ৩০ জুলাই থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত ১২ ডাক্তারসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডির সাইবার টিম। এদের মধ্যে ১০ নিজেদের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত চক্রের অন্যান্য সদস্য ও ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়া অসংখ্য শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া যায়।

এছাড়াও এ চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া মুন্নুর কাছে থেকে উদ্ধার হওয়া গোপন ডায়েরি থেকে সারাদেশে ছড়িয়ে থাকা চক্রের সদস্যদের সন্ধান পাওয়া যায়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তির প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম মূল হোতাসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার মাকসুদা আক্তার মালা ঢাকার মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজের শিক্ষিকা। ২০১৫ সালে নিজের মেয়ে ইকরাসহ আরও ৭ জন শিক্ষার্থীকে ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন। গ্রেফতার ডাঃ কে এম বশিরুল হক থ্রি ডক্টরস কোচিং সেন্টারের পরিচালক ও দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রশ্ন ফাঁসের মাধ্যমে অসংখ্য শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি করিয়েছেন তিনি। ইতোপূর্বে গ্রেফতার একাধিক আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ডাঃ বশিরুল হকের নাম এসেছে। এছাড়া প্রশ্নফাঁস চক্রের মাস্টারমাইন্ড জসীমের গোপন ডায়েরিতে তার নাম রয়েছে।

গ্রেফতার ডাঃ অনিমেষ কুমার কুন্ডু ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন মেডিকেল অফিসার। ২০১৫ সালে ১০ জন শিক্ষার্থীকে ফাঁসকৃত প্রশ্ন পড়িয়েছেন তিনি। এদের মধ্যে ৮ জন বিভিন্ন মেডিকেলে সুযোগ পেয়েছেন। গ্রেফতার জাকিয়া ফারইভা ইভানা ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। ডাঃ ইভানা ২০০৬-০৭ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় মেধায় ৬০তম স্থান অর্জন করেন।

তিনি মেডিকেল প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা ফেইম কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত ও প্রধান অভিযুক্ত ডাঃ ময়েজ উদ্দিন আহমেদ প্রধানের কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পান। গ্রেফতার সাবরিনা নুসরাত রেজা টুসী রংপুর মেডিকেল কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। গ্রেফতার অভিযুক্ত ডাঃ অনিমেষের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে সুযোগ পান তিনি।

গ্রেফতার জাকারিয়া আশরাফ ও মৈত্রী সাহা ২০১৫-১৬ সেশনের ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। এ দু’জনও অভিযুক্ত ডাঃ অনিমেষের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে সুযোগ পান।

সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানান, গ্রেফতারদের কাছ থেকে ৮টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা (নং-৪৩) দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana