নিউজ ডেস্ক
ময়মনসিংহে তীব্র তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে জনজীবন। বৃষ্টি-পরবর্তী মৌসুমে বাতাসে আর্দ্রতার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই তাপপ্রবাহ আরও তীব্র হয়েছে। শহরের বাসিন্দারা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে ছুটছেন ছায়ার খোঁজে। কেউ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন, আবার কেউ রাস্তার পাশে ঠান্ডা পানি বা শরবতে প্রশান্তি খুঁজছেন।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জয়নুল আবেদীন পার্ক, ঈদগাহ মাঠ ও নতুন বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, তীব্র গরমে মানুষজন নাজেহাল হয়ে পড়েছেন। গরমে কাজের প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া মানুষ অসহনীয় অবস্থায় পড়ছেন। তবে দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষজন জীবিকার তাগিদে প্রখর রোদ উপেক্ষা করে ছুটে চলেছেন। তাদের কেউ কেউ গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিয়ে কিছুটা স্বস্তি খুঁজছেন। অন্যদিকে, রাস্তার পাশে ঠান্ডা পানি বা শরবত পান করে গরম থেকে মুক্তির চেষ্টা করছেন অনেকেই। নগরীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিসেও একই অবস্থা। সেখানে কর্মচারীরা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে আশ্রয় নিচ্ছেন গরম থেকে বাঁচতে।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রোগী ও তাদের স্বজনরাও গরমে নাজেহাল। শিশু ওয়ার্ডের সামনের খোলা জায়গায় গাছের ছায়ায় বসে কিংবা শুয়ে হাতপাখার বাতাসে শান্তি খোঁজার চেষ্টা করছেন তারা। আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে অনেক তরুণ-কিশোর পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠান্ডা পানিতে জলকেলি করছে, যেন গরম থেকে মুক্তি পেতে সেখানে স্বস্তি খুঁজছে। জয়নুল আবেদীন পার্কেও অসংখ্য মানুষ তীব্র তাপ থেকে রেহাই পেতে ভিড় জমিয়েছে। একইভাবে, রিকশাচালকরা গাছের ছায়ায় সিটে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
শহরের একজন রিকশাচালক বলেন, “এত গরম আশ্বিন মাসে এর আগে কখনো দেখিনি। দিন-রাতের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এখন বদলে গেছে।” অনেকেই বলছেন, এই মৌসুমে এত গরম হওয়ার কথা নয়।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বর্ষা-পরবর্তী এই সময়ে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় তাপপ্রবাহ বেড়েছে। সোমবার ময়মনসিংহের তাপমাত্রা ছিল ৩৭.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি ড. শাহাব উদ্দিন বলেন, “অতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার এবং বৃক্ষ নিধনের ফলে তাপপ্রবাহের এমন অস্বাভাবিকতা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে এবং আরও বৃক্ষরোপণ করতে হবে।”
সূত্র: Dhakapost