
এইচ, এম, সাগর (হিরামন), বিশেষ প্রতিনিধি :
জেলা বা উপজেলা প্রশাসনের প্রতি সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। কিন্তু অনেক মানুষ ব্যতিক্রম আছে বলেই এখনও আশার আলো জ্বলে। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ নাজমুন নাহার তেমনই এক ব্যতিক্রমী উদাহরণ রাখছে সমগ্র উপজেলাতে। দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র এক বছরের মধ্যে সৎ, নিষ্ঠাবান ও মানবিক নেতৃত্বের মাধ্যমে বদলে দিয়েছেন পুরো উপজেলা প্রশাসনের চিত্র।
তিনি এখন একইসাথে ভাঙ্গুড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা পরিষদের প্রশাসক, সহকারী কমিশনার( ভূমি), পৌরসভার প্রশাসক, এবং দিলপাশার ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব একাই নিষ্ঠার সাথে পালন করে চলেছেন। অর্জন করেছেন সাধারণ মানুষের আস্থা, ভালোবাসা আর অকুণ্ঠ প্রশংসা। ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল ভাঙ্গুড়ার ইউএনও হিসেবে যোগ দেন নাজমুন নাহার। যোগদানের পর থেকেই শুরু হয় তার দুর্নীতিবিরোধী ও জনমুখী অভিযান,সরকারি প্রতিটি দপ্তরে ফেরান শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও গতিশীলতা। এর ফলে কমেছে জনভোগান্তি,বেড়েছে কার্যকর সেবা। শুধু কার্যালয়ে বসেই সেবা দিয়ে ক্ষ্যান্ত নয়,ইউএনও’র পদক্ষেপ ছড়িয়ে গেছে ভাঙ্গুড়ার প্রত্যন্ত ইউনিয়ন থেকে পৌর এলাকার অলি-গলি পর্যন্ত। ইভটিজিং,বাল্যবিয়ে কিংবা পারিবারিক নির্যাতনের মতো অন্যায়ের বিরুদ্ধে নেন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঝটিকা পরিদর্শনে বেড়েছে শিক্ষার মান। শিক্ষার্থীদের নৈতিক শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে নিয়েছেন নানা পদক্ষেপ। দুস্থ, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। দরিদ্র পরিবারের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন খাদ্য সামগ্রী, ও শীতবস্ত্র। তার এমন কার্যক্রমের স্বীকৃতি দিতে ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সংগঠন তাকে ফুল দিয়ে সম্মাননা প্রদান করেছে। জনসাধারণের সঙ্গে আলাপ কালে তারা বলছেন, তিনি শুধু একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা নন,এক জন মানবিক মানুষও বটে। যে কেউ তার সংগে দেখা করতে পারে, তাদের সমস্যার কথা বলতে পারে। যে কোনো বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন তিনি।
ভাঙ্গুড়া একজন সংবাদকর্মী বলেন,তিনি যেভাবে মানুষদের কাছে গিয়ে কথা শোনেন,তাতে বোঝা যায় উনি কতটা আন্তরিক এবং মানবিক। যাহার নজির পুরো ভাঙ্গুড়া উপজেলার মানুষ। উপজেলা যুবদল নেতা শাহীন বলেন, ‘মানুষ তাকে নিজের একজন মনে করে। অফিসের সময় না জেনেও ইউএনওকে অনেকে যখন তখন ফোন করে সমস্যার কথা বলছে অথচ তিনি বিন্দুমাত্র বিরক্ত না হয়ে সেই সমস্যার সমাধান করতে ব্যস্ত।
এক বছরের দায়িত্বে ভাঙ্গুড়ার ইউএনওর উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে অনলাইন অভিযোগ নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি, শিক্ষা খাতে অগ্রগতি, মানবিক সহায়তা,বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে সফল টাস্কফোর্স গঠন, সরকারি অর্থের সঠিক ব্যবহার, এবং উন্নয়ন প্রকল্পে সময় মতো কাজ শেষ করা।
এই অর্জনকে মানবিক, আধুনিক ও নাগরিক বান্ধব উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চায় ইউএনও । এই সাফল্য জনগণ ও প্রশাসনের সম্মিলিত প্রয়াসের ফল বলে, মনে করেন এলাকার সচেতন মহল।
সার্বিক বিষয় ভাঙ্গুড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার বলেন, এক বছরে ভাঙ্গুড়া উপজেলার সর্বস্তরের মানু্ষের যে আস্থা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা অর্জন করতে পেরেছি এটিই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। মানুষের সেবায় নিরলস ভাবে কাজ করে যেতে চাই। হয়তো শতভাগ সফলতা আসবেনা তবে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে আমার শতভাগ চেষ্টা থাকবে।