
মোঃ মনিরুজ্জামান চৌধুরী
কালিয়া প্রতিনিধি, নড়াইল।
সি এম বি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের দায়িত্বশীল, সৎ, মানবিক ও নিবেদিতপ্রাণ প্রধান শিক্ষক মোসা. মাহফুজা খাতুন-এর শেষ কর্মদিবসকে ঘিরে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এক আবেগঘন বিদায় ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
২৭ নভেম্বর ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) দূপূর ১টা, বিদ্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত এ অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক থেকে শুরু করে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের হৃদয়ের মিলনমেলায়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এলাকার সুপরিচিত চিকিৎসক এবং বিদ্যালয়ের সাবেক সফল সভাপতি ডাঃ হারুন-অর-রশিদ। সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন—
“মাহফুজা খাতুন শুধু একজন প্রধান শিক্ষক নন, তিনি ছিলেন এ বিদ্যালয়ের আলোকবর্তিকা। তাঁর কর্মনিষ্ঠা, সততা ও দায়িত্ববোধ আমাদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, অভিভাবক প্রতিনিধি, প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং স্থানীয় সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ অনেকেই। তারা বলেন—
“আমরা আজ একজন মহীয়সী, হৃদয়বান ও সুনামধন্য শিক্ষকে হারালাম। তিনি যে ভালোবাসা, যত্ন ও নিষ্ঠার সঙ্গে বিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়েছেন, তা যুগ যুগ স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
বক্তারা উল্লেখ করেন, তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি শুধুমাত্র পাঠদান বা প্রশাসনিক দায়িত্বই পালন করেননি; বরং শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, শৃঙ্খলা, মানবিকতা ও জীবনের মূল্যবোধ গঠনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। কঠোরতা দিয়ে নয়, মমতা দিয়ে তিনি শিক্ষার্থীদের কাছে হয়েছেন ‘মায়ের মতো’ আশ্রয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সকলেই বলেন, তাঁর বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যালয় হারাল এক অভিভাবকসুলভ প্রজ্ঞাময় নেতৃত্ব। বিশেষ করে শিক্ষার মানোন্নয়ন, পাঠদানের আধুনিকীকরণ, সহপাঠ কার্যক্রম ও শৃঙ্খলায় তাঁর ভূমিকা অবিস্মরণীয়।
অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কয়েকজন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা বলেন—
“মাহফুজা ম্যাডাম আমাদের চরিত্র গঠনের ভিত তৈরি করে দিয়েছেন। আজ আমরা জীবনে যে স্থানে পৌঁছেছি, তাঁর মানবিক শিক্ষা তার বড় ভিত্তি।”
শেষে মোসা. মাহফুজা খাতুনকে বিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক ও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। তিনি বিদায়ী বক্তব্যে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন,
“এই বিদ্যালয় আমার ভালোবাসার জায়গা। শিক্ষকতা আমার জীবনের সাধনা। আপনাদের আন্তরিকতা, ভালোবাসা ও সহযোগিতাই আমাকে সবসময় অনুপ্রাণিত করেছে।”
পুরো অনুষ্ঠানে ছিল আবেগ, সম্মান, কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধার অনুভূতিতে ভরপুর এক পরিবেশ। শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলেই তাঁর সুস্থ, সুন্দর ও শান্তিময় ভবিষ্যৎ কামনা করেন















