
বিশেষ প্রতিনিধি :
ঘটনা মূলত ৬ তারিখ রাতের, আসিয়া তার বোন এবং দুলাভাই একসাথে ঘুমিয়ে ছিলো। মাঝ রাতে বড়বোন ঘুম থেকে উঠে তাকে (আসিয়া) ফ্লোরে পড়ে থাকতে দেখে। মেয়েটা (আসিয়া) রাত থেকেই বলছিলো তার অনেক কষ্ট হচ্ছে, জ্বালা পোড়া করছে কিন্তু বিষয়টা কেউ বুঝতে পারেনি। ঘরের মধ্যে অন্ধকার থাকার কারণে গলার স্পট টাও কেউ খেয়াল করেনি। সকালে মেয়েটা তার বোনকে বলে তাওই (ধর্ষক হিটু) আমার সাথে এমন করছে….. তখন বড়বোন তার স্বামীকে বিষয়টা বললে তাকে ধরে মারধর করে। এরপর বড়বোনের শ্বাশুড়ি আসিয়াকে হাসপাতালে নিয়ে আসে পরবর্তীতে বিষয়টা সবাই বুঝতে এবং জানতে পারলে ঐ মহিলা (শ্বাশুড়ি) সেখান থেকে পালিয়ে যায়। এরপর মাগুরা সদর হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে সুবর্ণা মেয়েটা ওদের সার্বিক ভাবে সাহায্য করে। প্রচন্ড ব্লিডিং আর মেয়েটার মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে এবং সেন্স হারিয়ে যায় অবস্থা খারাপ দেখে তখন আমাদের জানানো হয় কি করবে? তাদের আর্থিক অবস্থাও অনেক খারাপ আপনারা হেল্প করিয়েন। তখন আমরা বলি পাঠিয়ে দাও খরচ নিয়ে কোনো চিন্তা করতে হবে না আমরা ব্যবস্থা করব। আগে ওর সুস্থ হওয়া জরুরি দ্রুত ঢাকা মেডিকেল পাঠাও।
এরপর ৯ টার একটু পরে ঢাকা পৌঁছালে আমরা সেখানে যায় ইমারজেন্সিতে ভর্তি করা হয় সেখানে নয়ন ভাইয়ের কিছু লোক ছিলো মেয়েটার সার্বিক সহায়তা করার জন্য। এরপর শিশু ওয়ার্ডে নেওয়া হয় সেখান থেকে কিছু স্যাম্পেল টেস্ট এবং বিভিন্ন পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়। ডাক্তার জানায় ধর্ষণের পর ওড়না জাতীয় কিছু দিয়ে গলায় ফাঁস দেওয়া হয় যে কারণে মেয়েটার ব্রেনে অক্সিজেন চলাচল কমে যায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখতে হবে । ডাক্তার বলে গলায় ফাঁস দেওয়ার কারণে মুখ দিয়ে ফেনা বের হয় এবং সেন্স হারিয়ে যায়। এজন্য অবস্থা খুবই খারাপের দিকে যায়। এছাড়াও মেয়েটার সারা শরীরে হায়নার মতো খুবলে ক্ষতবিক্ষত করেছে।
রাত ১ টায় ২০৭ নং ওয়ার্ডে অক্সিজেন লেভেল চেক করে এরপর ২ টার সময় আমার বন্ধুরা মিলে মেয়েটাকে PICU তে নিয়ে যায় এবং ভর্তিসহ যাবতীয় খরচ বহন করি। ডাক্তার জানান বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম তবে আশা আছে বাকিটা আল্লাহ ভরসা। অভিযুক্ত হিটু (বড়বোনের শশুর) এর আগে তার বোন সাথে অশ্লীল আচরণ করে এবং তাকে ধর্ষণও করে। কিন্তু সে তার স্বামীকে জানালে তাকে ধরে মারধর করে। বোনের অভিযোগ ঘরে যেহেতু আমরা তিনজন ছিলাম এবং দরজা ভেতর থেকে বন্ধ তাই সজীব (স্বামী) আসিয়াকে তার শ্বশুরের (হিটু) কাছে নিয়ে না গেলে কিভাবে যাবে? আর সে যদি কিছু না করে তবে বোনের সিচুয়েশনের অবস্থা বললে তার স্বামী (সজীব) কেন তাকে মারধর করবে? হিটু এবং সজীবের বিরুদ্ধে এর আগেও ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। পরিবারের দাবি ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি তারা চায়।
প্রশাসনের সাথে কথা বলে জানতে পারি ধর্ষক হিটুকে গতদিন ধরে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং আজ ভোরে সজীবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবেন কোনো প্রকার ছাড় দিবে না। মাগুরা জেলা পুলিশ যথেষ্ট এক্টিভলি কাজটা করছেন আশা করি তারা ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করবেন। অনেকে গুজব ছড়িয়ে মেয়েটার মারা গেছে বলে প্রচার করছেন এসব থেকে বিরত থাকুন। সে এখনো লাইফ সাপোর্টে আছে দোয়া করেন যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে যায়। মাগুরাবাসী সহ দেশবাসীর দাবি ধর্ষকের ফাঁসি দিতে যাতে ভবিষ্যতে এমন জঘন্য কাজ করার আগে দুইবার ভাবে। সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দেশবাসীর কাছে অনুরোধ থাকবে আপনারা ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।