প্রায় ২৫ বছরের রাজনৈতিক মিত্র বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর সম্পর্ক বর্তমানে এক অস্বাভাবিক টানাপোড়েনে রয়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকেই তাদের মধ্যকার দূরত্ব ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি হয়েছে, যেখানে বিএনপি এবং জামায়াতের মধ্যে নানা বিষয়ে মতপার্থক্য দেখা দিচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যেও সেই মতপার্থক্য স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বিএনপি বর্তমানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে, যেখানে জামায়াত ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের ওপর চাপ না দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে। দল দুটির মধ্যে ক্ষমা ও প্রতিশোধের বিষয়েও দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন।
সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান আওয়ামী লীগের ওপর প্রতিশোধ না নেওয়ার কথা বলায় বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপি এ ধরনের বক্তব্যকে রাজনৈতিক দূরত্ব হিসেবে না দেখলেও, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে বোঝাপড়ায় কোনো সংকট নেই।
তবে, নির্বাচন নিয়ে মতভিন্নতা আরও স্পষ্ট। বিএনপি দ্রুততম সময়ে নির্বাচন চায়, যেখানে জামায়াতের মতে সরকারকে কিছুটা সময় দিতে হবে। এ ছাড়া প্রশাসন, পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব লোক বসানো নিয়েও দল দুটির মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে নীরব দ্বন্দ্ব চলছে।
জামায়াতের ইসলামী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা, এবং তাদের নির্বাচনী কৌশল দল দুটির মধ্যে দূরত্ব বাড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এই দূরত্ব আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ভবিষ্যতে আরও রাজনৈতিক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।