হিরামন মন্ডল সাগর :
জীবকূলের বসবাসের উপযোগী করে রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে বেশি বেশি গাছ লাগিয়ে পরিবেশ বাঁচানো ও প্লাস্টিকের ব্যবহারকে না করার জন্যে সচেতনা মূলক পরামর্শ দেন কৃষি অধিদপ্তর। বটিয়াঘাটায় শতাধিক কৃষক কৃষাণীকে সচেতনতা বৃদ্ধির কর্মকাণ্ড নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে উপজেলার কৃষি অফিসের উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তা
জীবানন্দ রায়।
শতাধিক কৃষক কৃষাণীদের সাথে নিয়ে উপজেলার জলমা ইউনিয়নে দরগাতলা এলাকায় ৩ হাজার পিচ তালের বীজ রোপন করা হয় রাস্তার দুই পাশ দিয়ে। এছাড়া বিনামূল্যে আমড়া,আমলকী ও পেয়ারার দেড় শতাধিক ফলজ বৃক্ষের চারা বিতরণ করা হয়। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে কৃষাণ কিশানিদের মাঝে পরিবেশ দূষণে প্লাস্টিকের ব্যবহারকে না করার উপর সচেতন বৃদ্ধি ও ব্যবহৃত প্লাস্টিক নিদিষ্ট স্থানে মাটিতে পুঁতে ফেলতে উদ্বুদ্ধ করেন। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশগুলো মাত্রাতিরিক্ত কার্বন নির্গমন করছে আবার দাবানলে পুড়ে বিপন্ন হচ্ছে পৃথিবীর ফুসফুস আমাজন বন। যেখান থেকে বিশ্বে ২০% অক্সিজেন সাপ্লাই হয়। এ ছাড়াও বিভিন্ন কারনে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে ফলে অনাবৃষ্টি,অতিবৃষ্টি,ক্ষরা,সাইক্লোন ও তাপমাত্রা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে।
২০১৮ সনের এফএ ও এর সূত্রমতে দেশে ১৩ ভাগ বনভূমি রয়েছে কিন্তু কমপক্ষে ২৫ ভাগ থাকার প্রয়োজন। আবার প্রতি বছর মানুষের বজ্রপাতে মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ছে। এমতাবস্থায় সবাই পরিচর্যার মাধ্যমে বেশি বেশি গাছ ও রাস্তার দুই পাশ দিয়ে তালের বীজ রোপন এবং পলিথিন ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করা আমাদের সবার দায়িত্ব। তাহলে আমারই হবো পৃথিবীর রোল মডেল। দরগাতলা গ্রামের কৃষক কাজী আতিক বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে আমরা সবাই মিলে পরিবেশ রক্ষায় কাজে এগিয়ে আসলাম খুব ভালো লাগছে।
সংশ্লিষ্ট এলাকার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবানন্দ রায় বলেন, আগামী দিন গুলোর কথা ভেবে,যে যার অবস্থানে থেকে পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। এ জন্য কৃষক কৃষাণী দেরকে উদ্বুদ্ধ করে আমি এই কার্যক্রম ৮/৯ বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে এমতাবস্থায় বৃক্ষ রোপণের বিকল্প কিছুই নাই। তাই বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে।
বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোসনে আরা তন্নী বলেন, একটি দেশের মোট ভূখণ্ডের কমপক্ষে ২৫ ভাগ বনভূমি প্রয়োজন। বাংলাদেশে সেই তুলনায় অনেক কম। পর্যাপ্ত বনভূমি না থাকায় প্রতিনিয়ত বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। মরুভূমিতে রূপান্তর হচ্ছে দেশ। কাবর্ন- ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ প্রাণী জগতে বেড়েছে। ক্ষতিকর ক্লোরোফ্লোরো কার্বন,মিথেন ও নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণ অনেক গুণ বেড়েছে। ওজন স্তরে ফাটল সৃষ্টি হচ্ছে। অ্যাসিড বৃষ্টি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এন্টার্কটিকার বরফ গলে সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশে বজ্রপাতে অনেক লোকজন মারা যায়। তাই এই ছোবলের হাত থেকে রক্ষা পেতে বেশি বেশি তালের চারা রোপণ করা দরকার।