সর্বশেষ:

সংবাদ প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসেছে দপ্তর তদন্তের আশ্বাসে অনিয়ম ধামাচাপা পাইকগাছায় সড়কে নিম্নমানের কাজ দেখিয়ে প্রায় ৭০ লাখ টাকার বিল উত্তোলনের অভিযোগ

Facebook
Twitter
LinkedIn

পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি

খুলনার পাইকগাছা উপজেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কার প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসনিক দপ্তরগুলোতে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। তবে এলাকাবাসীর অভিযোগ—এই তৎপরতা লোক দেখানো, প্রকৃত তদন্ত এখনও অধরাই রয়ে গেছে।

পাইকগাছা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শিববাটি এলাকায় বায়তুর নূর জামে মসজিদ থেকে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) পর্যন্ত প্রায় ৭শ’ মিটার সড়কটি ‘গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-২ (IUIDP-2)’ এর আওতায় সংস্কার করা হয়। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় প্রায় ৭০ লাখ টাকা। কিন্তু কাজের মান নিয়ে শুরু থেকেই স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ ছিল।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২০ নভেম্বর গভীর রাতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিটুমিন ঢেলে তড়িঘড়ি সড়কের কাজ শুরু করে। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন এবং তদন্ত কমিটি গঠনের আশ্বাস দেন। কিন্তু রহস্যজনকভাবে সেই তদন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি। উল্টো পরদিনই আবার কাজ শুরু করে দ্রুত শেষ করা হয়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নুর আহমদের প্রত্যক্ষ জ্ঞাতসারে এবং গোপন সহযোগিতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তনুশ্রী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বাবু রাম নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে কাজ সম্পন্ন করেন। কাজ শেষ হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যেই রাস্তার বিভিন্ন অংশে পিচ ও খোয়া উঠে যেতে শুরু করেছে।

এলাকাবাসী জানান, সঠিক মান বজায় রেখে কাজ করা হলে এই সড়ক বহু বছর টেকসই থাকার কথা ছিল। অথচ এক মাস না যেতেই রাস্তার বেহাল দশা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। সামনে বর্ষা মৌসুমে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের নীরবতাকে পুঁজি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দ্রুত কাজ শেষ করে সরকারি অর্থ লোপাটের চেষ্টা করেছে।

সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে তড়িঘড়ি তৎপরতা লক্ষ্য করা গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত কমিটি বা লিখিত তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে আসেনি। ফলে এলাকাবাসীর প্রশ্ন—এত বড় প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পরও কেন কার্যকর তদন্ত হচ্ছে না?

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তনুশ্রী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বাবু রাম দাবি করেন, যেখানে সমস্যা দেখা দিয়েছে সেখানে নতুন করে বিটুমিন ঢেলে কার্পেটিং করা হবে এবং দ্রুত সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হবে।
পাইকগাছা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নুর আহমদ বলেন, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তদন্ত করেছিলেন এবং সমস্যা চিহ্নিত করে কাজ করতে নির্দেশ দেন। সে অনুযায়ী কাজ করা হয়েছে। ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, “এখন আর ঘুষ-টুস নেই, ভালোভাবেই কাজ হয়েছে।”

তবে এলাকাবাসীর দাবি, কথিত তদন্তের কোনো লিখিত প্রমাণ বা প্রতিবেদন না থাকায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা স্পষ্ট। তারা দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্ত, প্রকল্পের কাজের মান যাচাই এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana