বিশেষ প্রতিনিধি :
পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো: আব্দুস সাত্তার এর বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র ও হয়রানি মুলক অপপ্রচার চালিয়া একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। মাদ্রাসা সুপার বিভিন্ন অপপ্রচারও হয়রানির প্রতিবাদে সম্প্রতি ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে সুপার বলেন,ষড়যন্ত্রকারীরা মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে সংবাদ সংগ্রকারী কিছু ভাড়াটে লোকজন নিয়ে মানববন্ধন করেছেন এবং মাদ্রাসার অফিসে তালা ঝুলিয়েছেন। নামধারিয়া কথিত সংবাদ কর্মী নেতৃত্বে একটি কুচক্রী মহল আমার নিকট চাঁদা দাবী করে আসছেন। হুুমকিকারীরা বলেন, দাবীকৃত টাকা না দিলে আপনি অধ্যক্ষ পদে থাকতে পারবেন না। তাদের এসব হুমকিতে কর্ণপাত না করায় সোস্যাল মিডিয়াসহ একাধিক অখ্যাত পত্রিকায় আমার নামে বিভিন্ন মিথ্যা খবর ছড়িয়ে আসছেন এবং আমাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তা করার জন্য আজ সেই কুচক্রী মহল এই মানববন্ধন করেন এবং আমার অফিসে ঢুকে মাদ্রাসার গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং সম্পদ নষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং আমার (অধ্যক্ষ) অফিস এ তালা ঝুলানোর মতো দুঃসাহস দেখান। এ ঘটনার কারণে ব্যক্তিগতভাবে আমার জান ও মালের ক্ষতির হুমকিতে রয়েছি, একইসাথে দীর্ঘদিনের সনামধন্য ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে এবং হচ্ছে। আমি বাক্তিগতভাবে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে সম্পৃক্ত নয় কিন্তু বাংলাদেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি যে কোন দলকে সমর্থন করতে পারি তবে, সেটা নিঃসন্দেহে আওয়ামীলীগের মত সৈরাচার দল নয়। আর আমি
যদি আমার পরিবার, ছেলে-মেয়ে এমনকি আমার আত্মীয়স্বজন দের রাজনৈতিক মতাদর্শের কথা বলি তাহলে আপনারা খোজ-খবর নিয়ে দেখতে পারেন, কখনো কেউ আওয়ামীলীগ বা এর কোন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলনা বরং তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন। আমি কোন রাজনৈতিক দলের নাম নিচ্ছি না বরং সে ক্ষেত্রে আপনারা মনে করতে পারেন, আমি হয়তো সেই রাজনৈতিক দলের আনুকূল্য নিতে চাচ্ছি। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ অধ্যয়নরত আমার ছোট ছেলে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করে যা তার এফবি ওয়াল চেক করলে পাবেন। এবং এখন যারা আমাকে আওয়ামীলীগের নেতা বলছেন তারাই ২০২২ সালে আমার অপসারণ চেয়ে এই মর্মে সংবাদ প্রচার করে যে, আমি নাকি রাজাকারের আত্মার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করেছি। তাহলে তাদের কোন কথা সত্য? বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ক্ষমতাসীন দলের এমপি/নেতারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদেরকে কোন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করলে যদি উক্ত অনুষ্ঠানে না যাওয়া হয় তাহলে কখনো কোন প্রতিষ্ঠান উন্নয়নমূলক কাজের বাজেট পায় না
বরং প্রতিষ্ঠানটি চালাতেও বাধার সম্মুখীন হতে হয়। একই সাথে গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিভিন্ন দিবস পালন করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বাধ্যতামূলক হওয়ায় কিছু কিছু দিবস পালন করা হয় যা অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তুলনায় অতি সামান্য। সেইসব দিবস পালনের ছবি প্রচার করে আমাকে আওয়ামীলীগের নেতা হিসেবে প্রমান করার চেস্টা করছে যা নিতান্তই মিথ্যা ও বানোয়াট। মোঃ আব্দুস সাত্তার এখানে উল্লেখ্য, কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসা'র ইতিহাসে প্রথম আমার আমলেই আমার সহকর্মীদের সহযগিতায় এই প্রতিষ্ঠানটিতে সম্পূর্ণ সরকারী খরচে ভবন নির্মাণের জন্য প্রায় ৪ কোটি টাকার বাজেট আনতে সক্ষম হই। ভবনটি নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত জমির প্রয়োজন হলে তখন স্থানীয়দের নিকট থেকে জমি ক্রয়করার প্রয়োজন হয়। ফলে মাদ্রাসার জন্য প্রয়োজনীয় জমি ক্রয় করি।
পরবর্তীতে, জমির মালিকরা মাদ্রাসার জন্য ক্রয়কৃত জমির পাশের জমি বিক্রয় করার ইচ্ছা প্রকাশ করলে আমি ব্যক্তিগতভাবে ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করি যা আমার নামে রেজিস্ট্রিকৃত ও নামজারীকৃত অতঃপর, মাদ্রাসার ভবনের কাজ শুরু হলে মাদ্রাসার জন্য প্রয়োজনীয় ক্রয়কৃত জমির উপরে ভবনের বেজমেন্ট তৈরী হওয়ার পর যখন আমি আমার জমি বের করে দিতে বলি তখন তারা বলে আপনার জমি তো মাদ্রাসায় চলে গেছে পরবর্তীতে যাতে তাদের কাছে জমি দাবী করতে না পারি সেজন্য আমার ব্যক্তিগত জমি মাদ্রাসার নামে লিখে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চাপ দিতে থাকে। কিন্তু আমি রাজী না হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রপাগন্ডা ছড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি তাদেরকে বলি বিরোধীয় ২.৫০ শতাংশ জমি মাদ্রাসার নামে লিখে দিব কিন্তু আমাকে অন্য জায়গা থেকে বুঝিয়ে দিতে হবে। তারা এতে রাজী না হয়ে বলে জমি বিনা টাকায় দিতে হবে এমনকি রেজিস্ট্রি খরচও আমাকে দিতে
হবে। তাদের এসব অমূলক দাবী না মানায় আজ এই মানববন্ধন করেছে। আমি এখনও বলছি, আমার বিরুদ্ধে যদি এ বিষয়ে কারোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকে তাহলে আইন ও আদালত রয়েছে সেখানে অভিযোগ করলে আমি আইনের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান ও শ্রদ্ধা দেখিয়ে আইনি লড়ায় করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে অভিযোগ ছড়ানো হচ্ছে সে বিষয়ে বলবো আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ পাক আমাকে যেটুকু দিয়েছেন তাতেই আমি খুশি, অন্যের সম্পদের দিকে নজর দেওয়ার মানসিকতা অথবা প্রয়োজনীয়তা কোনটাই আমার নাই। এমনকি নিরোপক্ষ হিসাবায়ন কমিটির হিসাব মতাবেক আমি ব্যক্তিগতভাবে মাদ্রাসার নিকট ১০ লক্ষাধিক টাকা পাই যা আমার বেতনের টাকা থেকে খরচ করা হয়েছে মাদ্রাসার জমি ক্রয় ও বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে। এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে যদি কোন চাকরি প্রার্থী প্রমান করতে পারেন যে, তার নিয়োগের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে ১ টাকার আর্থিক সুবিধাও দাবী করেছি বা ভোগ করেছি তাহলে আমি সেচ্ছায় আমার পদ থেকে পদত্যাগ করবো।
আরো স্পষ্ট করে বলতে গেলে, মাদ্রাসার চাকুরীর পাশাপাশি আমার সন্ধাকালীন ঔষধের ব্যবসা ও ওয়াজ মাহফিলসহ নানামুখী কর্মে সংশ্লিষ্টতা থাকায়, বড় কোন ব্যাংক ব্যাল্যান্স না থাকলেও আল্লাহ পাকের রহমতে আমার অন্তত আর্থিক অসচ্ছলতা নাই। এছাড়া আমার সন্তানরাও আধিকাংশ স্বনির্ভর হওয়ায় আমার সংসারে তাদেরও অবদান রয়েছে। এর পরেও যদি এ বিষয়ে কারোর কোন সন্দেহ থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অথবা সংস্থার শরণাপন্ন হতে পারেন আমি দায়িত্বশীলদেরকে এ বিষয়ে উত্তর দিতে প্রস্তুত রয়েছি। অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের যোগ্যতার কথা যদি বলি,শিক্ষাগত যোগ্যতা: আমি হিফজুল কুরআন শেষ করার পরে দাওরায়ে হাদিস পাশ করি৷ অত:পর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আমি দাখিল থেকে কামিল পরীক্ষার সবগুলোতেই ১ম শ্রণী অর্জনের পাশাপাশি বোর্ড স্টান্ড করি এবং পরবর্তীতে ডিগ্রী ও মাস্টার্সে ও স্টান্ড করি যে কৃতিত্বের কথা তখনকার সময় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ করা হয়। আর অধ্যক্ষ পদের জন্য অভিজ্ঞতার কথা যেটা তারা বলছেন তা যদি আমার না থাকতো তাহলে নিয়োগ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ আমাকে কিভাবে নিয়োগ দিল? সুতরাং, সব বানোয়াট বক্তব্য আমার নামে প্রচার করে জনমনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এই কুচক্রীমহল ফায়দা হাসিল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আর ব্যক্তিগতভাবে যে প্রোপাগান্ডা গুলো আমার নামে ছড়ানো হচ্ছে তা নিতান্তই মিথ্যা।
আমি আবারও বলছি কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে থাকে তাহলে দেশে আইন, আদালত ও প্রশাসন রয়েছে তাদের কাছে অভিযোগ জানালে আমি আইনগতভাবে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত আছি। পরিশেষে, আমার প্রতিষ্ঠানে আজ যে ঘটনা ঘটেছে আমি তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং এই ঘটনার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আমি ইতোমধ্যে পাইকগাছা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি যার নম্বর ১৩৫৩,তারিখ ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫।