খুলনার পাইকগাছার শিবসা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে রূপালি ইলিশ। কাঙ্ক্ষিত ইলিশ ধরা পড়ায় জেলেদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক। তবে, ইলিশের দাম এখনো সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। বাজারে ইলিশের সরবরাহ পর্যাপ্ত না, আর দর বেশি থাকায় হতাশ সাধারণ ক্রেতারা।
ইলিশ মাছ সাধারণত সাগরে বাস করে, তবে প্রজননের জন্য ডিম পাড়ার উদ্দেশ্যে নদীতে বা মিঠা পানিতে আসে। এর প্রধান কারণ হল, সমুদ্রের লবণাক্ত পানি ইলিশের ডিমের জন্য ক্ষতিকর এবং ডিম থেকে পোনা তৈরি হতে দেয় না। তাই ডিমকে রক্ষা করার জন্য ইলিশ মাছ মিঠা পানিতে আসে। কিছু ক্ষেত্রে, ইলিশ মাছ নদীর আশেপাশে থাকা জলজ উদ্ভিদ এবং ছোট মাছ শিকার করার জন্যেও মিঠা পানিতে আসে। জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত উপকূলের নদ-নদীর পানি মিষ্টি থাকে। শিবসা ও কপোতাক্ষ নদে মিঠা পানির প্রবাহ সীমিত রয়েছে। তারপরেও এসময় উপকূলের শিবসা ও কপোতাক্ষ নদে প্রচুর পরিমানে ইলিশ মাছ আসে।
উপজেলার সোলাদানা ও দেলুটির শিবসা নদীতে জেলেরা জাল পেতে ইলিশ মাছ আহরণ করছে। মাঝে মধ্যে সকাল বেলা পাইকগাছা মাছ কাটায় ইলিশ মাছ ডাকে বিক্রি হয়। এক কেজি ওজনের মাছ তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। নদী পাড়েও গড়ে উঠেছে ইলিশ বিক্রির অস্থায়ী বাজার। নদী থেকে জালে উঠা তাজা নদীর পাড়ে বিক্রি হচ্ছে।
বাংলাদেশের ইলিশ মাছের প্রজনন মৌসুম সাধারণত সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে হয়ে থাকে। এই সময়ে নদীতে স্রোত ও পানির গুণাগুণ ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত থাকে। এসময় ইলিশের প্রধান প্রজননকাল। মাছগুলো ডিম ছাড়ে উপকূলবর্তী এলাকায়।
পাইকগাছা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক জানান, সাধারণত আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে শিবসা ও কপোতাক্ষ নদে মিঠা পানির প্রবাহ থাকে। এসময় সোলাদানা ও দেলুটি শিবসা নদীতে ইলিশ মাছ আসে। ইলিশ মাছের ডিম সমুদ্রের লবণাক্ত পানিতে বাঁচতে পারে না, তাই ডিম পাড়ার জন্য নদীর মিঠা পানি তাদের জন্য উপযুক্ত। ইলিশ মাছ সাধারণত নদীর মোহনা থেকে উজানের দিকে আসে ডিম পাড়ার জন্য। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হওয়ার পর, সেই বাচ্চারা (জাটকা) সাগরে ফিরে যায়।