সাংবাদিক মামুন রেজার আকর্ষিক মৃত্যুতে খুলনার সাংবাদিক সমাজ শোকোস্তব্ধ। এমন একটি হৃদয়বিদারক খবরে সকলেই হতবিহ্বল হয়ে পড়েছে। হাসপাতালের জরুরী বিভাগে মামুন রেজার নিথর দেহ হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে দিয়েছিল সকল সহকর্মীদের। এমন একটি তরতাজা প্রাণ অকালে হারিয়ে যাবে তা কেউ ভাবতে পারেনি।
সাংবাদিকতার শুরু থেকে যে চমক দেখিয়ে খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেসক্লাবের নেতৃত্বে এসেছিলেন সেই চমক দেখিয়েই চিরপ্রস্থান হলেন। আমি দৈনিক রাজপথের দাবি ও দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকায় কাজ শুরু করার কিছুদিন আগেই মামুন ভাই সমকালে যোগদান করেছিলেন। দুপুরে রাজপথের দাবির ব্যস্ত সময়ে কাগজে লেখা সাংবাদিকতা শিক্ষার সেই সোনালী সময়গুলোতে মামুন ভাইকে সহকর্মী হিসেবে না পেলেও রাজপথের দাবী ও জন্মভূমির প্রতি তার যে ভালোবাসা দেখেছি তা বলে বুঝাতে পারবো না। সহকর্মীদের বিভিন্ন নামে ডেকে মামুন ভাই খুব মজা পেতেন। তার মায়াবী ব্যবহার সবাইকে মুগ্ধ করত। আমাকে দিলীপ স্যার নামেই ডাকতেন। একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে মামুন ভাই নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ব্যবহার দিয়ে জয় করেছিলেন পেশার অন্যান্য সাংবাদিকদের মন। তাই তিনি খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের দুইবার সভাপতি এবং খুলনা প্রেস ক্লাবের চারবার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। নির্বাচনের লড়াইয়ে মামুন রেজার প্রতিদ্বন্দ্বী খুব কম সাংবাদিক ছিল।
তার হঠাৎ চলে যাওয়ায় খুব মনে পড়ছে সেসব দিনের কথা। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে আমি দৈনিক পূর্বাঞ্চলে যোগদান করি। পহেলা বৈশাখ নিয়ে আমি একটি নিউজ করেছিলাম। সেটা দেখে মামুন ভাই খুবই বকেছিলেন। একুশে ফেব্রুয়ারির প্রভাত ফেরির উপস্থাপনায় কোন ভুল বাক্য বললে প্রেসক্লাবে আসার পর আমাকে বলতে এটা ভুল হয়েছে। খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের নির্বাচনে আমাদের জন্য সীমাহীন পরিশ্রম করেছিলেন। কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হওয়ার পর সবসময় বলতেন হিসাবটা ঠিকমতো রেখো তা না হলে কিন্তু সমালোচিত হতে হবে। এখন খুব মনে পড়ছে মামুন ভাইয়ের কথা। পরপারে ভালো থাকবেন।