পাইকগাছা ( খুলনা) প্রতিনিধি
খুলনার পাইকগাছার আলোচিত শিববাটী ব্রীজের টোল মুক্ত করার দাবিতে আবারো কঠোর অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। শনিবার সকালে শিক্ষার্থীরা ব্রীজে অবস্থান নিয়ে টোল মুক্ত করার দাবি জানায়। এসময় ব্রীজের দুপাশে জানজট সৃষ্টি হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থল ও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা যৌথভাবে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
উল্লেখ্য পাইকগাছা ও কয়রা প্রধান সড়কের শিববাটীস্থ কপোতাক্ষ নদের উপর সড়ক বিভাগের একটি ব্রীজ রয়েছে। প্রতিদিন এ ব্রীজ দিয়ে পাইকগাছা কয়রা সহ আশেপাশের বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ এবং বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে থাকে। ব্রীজটি টোল মুক্ত করতে এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছে। ইতোপূর্বে একাধিক সংসদ সদস্য ও টোল মুক্ত করতে চেষ্টা করেছে। কিন্তু দীর্ঘ চেষ্টা করে যখন টোল মুক্ত করা সম্ভব হয়নি, তখন এলাকার মানুষ শেষমেশ অপ্রত্যাশিত টোল তুলে নিতে দাবি জানায়। এলাকাবাসীর এ দাবি ও কোন আমলে আসেনি। বর্তমানে নেহা এন্টারপ্রাইজ নামে খুলনার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক বিভাগ থেকে ইজারা নিয়ে স্থানীয় মিনারুল ও আনারুল এর মাধ্যমে টোল আদায় করে আসছিল।
অবশেষে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট টোল ঘর ভাংচুর করে টোল আদায় বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেই থেকে বেশ কিছু দিন টোল আদায় বন্ধ থাকে । এরপর দু দফায় আদায় এবং বন্ধ করা হয়। গত কয়েকদিন আবারো টোল আদায় শুরু করলে শিক্ষার্থীরা শনিবার সকালে ব্রীজে অবস্থান নিয়ে টোল মুক্ত করার দাবি জানায়। এসময় যানযট সৃষ্টি সহ উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হলে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, থানা পুলিশ এবং সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন। আলোচনায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১০ জন প্রতিনিধি অংশ নেয়। এসময় তারা টোল চার্ট না থাকা, অতিরিক্ত টোল আদায়, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে টোল আদায় সহ বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরে সম্পূর্ণ টোল মুক্ত করার দাবি জানায়। টোল আদায় চলমান একটি প্রক্রিয়া উল্লেখ করে কতৃপক্ষ বলেন উর্দ্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশনা ছাড়া টোল মুক্ত করা সম্ভব নয়। জনসাধারণের পক্ষে কতৃপক্ষ বরাবর আবেদন করার মাধ্যমে টোল মুক্ত করার জন্য শিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন কতৃপক্ষ। এছাড়া অন্যান্য বিষয় গুলো দ্রুত সমাধান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তারা। এছাড়া আলোচনায় এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সকলের প্রতি আহবান জানান কতৃপক্ষ। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন, সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ইসবাত, ওসি ওবাইদুর রহমান, সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী সাগর সৈকত মন্ডল, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস, উপ সহকারী প্রকৌশলী আজিম কাওসার, শিক্ষার্থী নয়ন, মেহেদী হাসান, কাবিদ ও হোজাইফা সহ অনেকেই।