পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ
খুলনার পাইকগাছার লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়ে দুই প্যানেল চেয়ারম্যানের মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। চেয়ারম্যান ৩ মাসের ছুটিতে যাওয়ায় প্যানেল চেয়ারম্যান ১ জাহাঙ্গীর আলম সানা এবং প্যানেল চেয়ারম্যান ২ পরমানন্দ সানার মধ্যে এ বিরোধ তৈরী হয়েছে। অপরদিকে বিধিমোতাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান। এসব কারণে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় গত ২২ আগস্ট থেকে ৩ মাসের ছুটিতে রয়েছেন লস্কর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন। ছুটিতে যাওয়ার আগের দিন তিনি ২১ আগস্ট পরিষদের ভার্চুয়াল সভা করেন। সভায় চেয়ারম্যান সহ ১১ জন সদস্য অংশ নেয়। অনুষ্ঠিত এ সভায় চেয়ারম্যান ছুটিতে থাকাকালীন সময়ে প্যানেল চেয়ারম্যান ২ পরমানন্দ সানা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ সংক্রান্ত রেজুলেশন ও করা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন প্যানেল চেয়ারম্যান ১ জাহাঙ্গীর আলম সানা। বিষয়টি জানার পর জাহাঙ্গীর আলম ইউনিয়ন পরিষদের সচিব কে গালিগালাজ করেন। এ ঘটনায় ইউপি সচিব ফারুক হোসেন সরদার জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। পরে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। এছাড়া পরিষদের রেজুলেশন, হাজিরা খাতা এবং গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ করেছেন ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান। তিনি এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর ৯ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এছাড়া পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান বিধিমোতাবেক গঠন করা হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে ইউপি সদস্য হাসানুজ্জামান বলেন পরিষদ গঠনের পর ১-১১-২০২১ তারিখে প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ অনুযায়ী পরিষদ গঠিত হওয়ার প্রথম সভার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করার নিয়ম রয়েছে। অথচ নিয়মনীতি অনুসরণ না করেই চেয়ারম্যান কে এম আরিফুজ্জামান তুহিন সাবেক ইউপি সচিব এর যোগসাজশে প্রথম সভার ১১ মাস পরে ২৮-৮-২০২২ তারিখে লটারির মাধ্যমে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করেন। ইউনিয়ন পরিষদ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নতুন করে বিধিমোতাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে প্যানেল চেয়ারম্যান ২ পরমানন্দ সানা বলেন জাহাঙ্গীর আলম চাপ প্রয়োগ করে রেজুলেশন নিয়ে নেয়। এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর আলম বলেন রেজুলেশন সহ কোন কাগজপত্র জোর করে নেওয়া হয়নি। এগুলো আমি চেয়ে নিয়েছিলাম।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে সভায় এ সিদ্ধান্তের কথা বলা হচ্ছে সে সভার বিষয়ে আমি সহ অনেকেই জানানো হয়নি। প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন সংক্রান্ত নিয়মের বিষয়টি চেয়ারম্যান সচিব সহ দায়িত্বশীল অভিজ্ঞ কেউ ওই সময় উল্লেখ করেনি বলে জানান। প্যানেল চেয়ারম্যান গঠনের বিধিগত বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় কে অবহিত করা হয়েছে বলে ইউপি সচিব ফারুক হোসেন সরদার জানান। এ ব্যাপারে বিধিমোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন জানান।