
পাইকগাছা (খুলনা )প্রতিনিধি
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা ধবংসের মাষ্টার মাইন্ড ওলামা লীগ নেতা মাদ্রাসার দানের জমি আত্মসাতকারী অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তারের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ছাত্র-জনতা, জমি দাতা ও এলাকাবাসীর উদ্যোগে রবিবার সকালে (২৩ফেব্রুয়ারি) উপজেলার কপিলমুনিতে জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার পাশে মেইন সড়কে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন ছাত্র জনতার পাশাপাশি, জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থী, মাদ্রাসায় জমি দাতা ও শত শত মানুষের উপস্থিতিতে মানববন্ধন জনসভায় রুপ নেয়।
এসময় নারী লোভী দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মাও আব্দুস সাত্তার মাদ্রাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়। বক্তব্য রাখেন, মাদ্রাসার জমি দাতা শেখ সাহাজুদ্দিন, উপজেলা নিরাপদ সড়কের সভাপতি এইচএম শফিউল ইসলাম, জমি দাতা শেখ ইউনুস আলী, পাইকগাছা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি শেখ সেকেন্দার আলী, শেখ বাবু ,জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাদের, মোঃ সোহেল গাজী, মোঃ বিল্লাল হোসেন প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া অধ্যক্ষ মাদ্রাসার প্রতিটি কোনায় কোনায় দুর্নীতি করেছে। অর্থের বিনিময়ে অদক্ষ শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ থেকে শুরু করে ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা ধংস করেছেন। স্বল্প মূল্যে মাদ্রাসায় জমি দানের কথা বলে অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার নিজের নামে সাড়ে ৪ শতক জমি লিখে নিয়েছেন। স্বল্পমুল্যে খরিদ করা জমি তিন গুণ দাম দেখিয়ে মাদ্রাসার টাকা আত্মসাৎ, গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জন প্রতি ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে নিজের ইচ্ছে মত অদক্ষ শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিয়েছেন। চাকরির সুবাদে মাদ্রাসা ফাঁকি দিয়ে সকাল থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত কবিরাজি ব্যাবসা নিয়োজিত থাকেন। তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলে শিক্ষকদের সাথে হাতাহাতি ও রক্তাক্ত করেন তিনি। ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসা ধংসের মাষ্টার মাইন্ড অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার লুটপাটের হাত থেকে রক্ষা করতে ও ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার শিক্ষার পরিবেশ রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। উল্লেখ্য, অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্তির আগে তিনি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার লাউড়ী রামনগর কামিল এম,এ মাদ্রাসায় কর্মরত ছিলেন। তিনি ঐ প্রতিষ্ঠানে ১/৭/১৯৯৪ সালে যোগদান করেন এবং ১৬/১১/১৯৯৭ সালে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যার ইনডেক্স নং-৩৬৪৩৮২।
এরপর ২০১৩ সালের ৩ মে কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিলে ঐ বছরের ৬ জুলাই নিয়োগ পরীক্ষায় তাকে উত্তীর্ণ করা হয়। যদিও সরকারী পরিপত্র সর্বশেষ জনবল কাঠামোর পরিশিষ্ট ১১(২) ’ঘ’তে বর্ণিত কাম্য সংখ্যক অভিজ্ঞতা ১৫ বছর থাকার কথা থাকলেও তার অভিজ্ঞতা ছিল ১৪ বছর ২ মাস। এছড়া জনবল কাঠামো ২০১০ এর পরিশিষ্ট ১১(২) অনুচ্ছেদেও বর্ণনামতে তিনি ঐ পদে নিয়োগ পেতে পারেননা। ১৯৯৫ সালের জনবলকাঠামোর ১৪ নং ধারায় ‘এক প্রতিষ্ঠান থেকে চাকুরী ত্যাগ করার পর অন্য প্রতিষ্ঠানে যোগদানকালীণ সময়ের ব্যবধান ৬ মাসের অধিক হলে উক্ত মেয়াদ অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে গণ্য হবেনা।’ সে আলোকে তার ব্রেক অব সার্ভিস (চাকুরি বিরতি) হয়েছে এবং একই কারণে তার পূর্বের অভিজ্ঞতা গণনা যোগ্য হবেনা। অর্থাৎ ১৭/১১/১৯৯৭ থেকে ২৮/২/১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি কোন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন না। এমন পরিস্থিতিতে তিনি চাকুরি বিরতি কালীণ সময়কে চাকুরিকাল দেখিয়ে প্রভাষকের টাইম স্কেল গ্রহনপূর্বক একইভাবে চাকুরি বিরতি সময়কে অভিজ্ঞতা গণনা করে সেখানে অধ্যক্ষ পদে আবেদন করেন। যার ফলে তার আবেদনপত্রটি বাছাই পর্বে বাতিল হওয়ার কথা ছিল। অথচ তৎকালীণ নিয়োগ কমিটি সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তাকে সেখানে নিয়োগ দেন। এসময় বক্তব্যরা আরো বলেন, অনতিবিলম্বে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার অপসারিত না হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবেন। এসময় উপস্থিত নারীরা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অফিস তালা লাগিয়ে দেন।