
পাইকগাছা ( খুলনা ) প্রতিনিধি
অধ্যক্ষ নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য প্রয়োজন ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা। প্রাথমিক তদন্তে ধরা পরল সেই অপূর্ণতা। খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি জাফর আউলিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় এমন ঘটনা ধরা পড়লো, তাও আবার নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার এক যুগ পর। অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার (ওরফে অল ফার্স্ট ক্লাস আব্দুস সাত্তার) নিজের বৈধতা প্রমাণে তদন্ত কমিটির সামনে কিছু যুক্তি উপস্থাপন করেন।
অবশ্য সে খোঁড়া যুক্তি ধোপে টেকেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত সর্বশেষ পরিপত্রের কাছে। তদন্ত কমিটি মনে করে, মোঃ আব্দুস সাত্তার এর অধ্যক্ষ নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য ১৫ বছর অভিজ্ঞতা পূর্ণ হয়নি মর্মে প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণিত হয় এমনটি জানিয়েছে একটি দায়িত্বশীল সূত্র। জানা গেছে, কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোঃ আব্দুস সাত্তার এর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- কর্মচারীবৃন্দ, আর্থিক অনিয়ম নারী কেলেঙ্কারি, সহ ৮টি বিষয়ের উপর সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। গত ১৮ মে তিন সদস্য তদন্ত কমিটি ধার্যকৃত সময়ের মধ্যেই তদন্ত সম্পাদন পূর্বক সুপারিশসহ সভাপতি বরাবর দাখিল করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ৮টি বিষয় আমলে নিয়ে অধ্যক্ষের অভিজ্ঞতার অপূর্ণতা, প্রতিষ্ঠানের আয়- ব্যয়, সরকারি বরাদ্দ, ক্যাশ রেজিস্টার বা অন্য সকল প্রমাণাদি যেভাবে বিধি মোতাবেক করা প্রয়োজন সেটি অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার করেননি। সে কারণে প্রাথমিকভাবে আর্থিক অনিয়মে তদন্ত কমিটি দায়ী মনে করেন। শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিও ভুক্তি, বিএড স্কেল, উচ্চতর স্কেল প্রদানে ঘুষ গ্রহণে শিক্ষক হোসনেয়ারা খাতুনের কাছ থেকে চেক গ্রহণের বিষয়টি অধ্যক্ষ স্বীকার করায় তদন্ত কমিটি এ বিষয়ে অধ্যক্ষ কে প্রাথমিকভাবে দায়ী মনে করেন এবং টিউশন ফিসের ব্যাপারে তদন্ত কমিটির কাছে অধ্যক্ষ নিজেই স্বীকার করেছেন, তিনি আংশিক টাকা নিয়েছেন।
যেহেতু তিনি শিক্ষকের সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করেননি এবং যথাযথ খাতে টাকা ব্যয় না করায় তদন্ত কমিটি অধ্যক্ষ কে প্রাথমিকভাবে দায়ী মনে করেন। এছাড়া তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগে অর্ধকোটি টাকা উৎকোচ গ্রহণ, প্রতিষ্ঠানের জমি ক্রয়ে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বক্তব্য, আয়ার সাথে অবৈধ সম্পর্ক, পিবিজিএসআই এর টাকা আত্মসাৎ, এনটিআরসিএ টাকা আত্মসাৎ এর বিষয় সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হাওয়াই অধিকতর তদন্তের জন্য সুপারিশ করেছেন বলে জানা গেছে। এদিকে অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বিধি মোতাবেক ৫ সদস্য বিশিষ্ট উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে। এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এম এম জামিরুল ইসলাম, তদন্ত রিপোর্ট সভাপতির নিকট জমা হয়েছে স্বীকার করে বলেন, নিয়ম মেনেই তদন্ত কার্যক্রম চলছে। ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার মোঃ আইয়ুব হোসেন জানান, চাকুরী বিধি অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।