
আবু-হানিফ,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলা তার প্রতিষ্ঠার গৌরবময় ৭৫ বছর পূর্ণ করল। এই বিশেষ মাইলফলক উপলক্ষে মোংলাবন্দর কর্তৃপক্ষ , সোমবার (০১ ডিসেম্বর) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে ‘প্লাটিনাম জয়ন্তী’ উদযাপন করেছে।
বেলা ১২টায় বন্দরের প্রধান ফটকের সামনে বেলুন উড়িয়ে এই জমকালো আয়োজনের উদ্বোধন করেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান।এর আগে বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বন্দর ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। নানা রঙের ফেস্টুন, ব্যানার আর ব্যান্ড পার্টির বাদ্যে মুখরিত শোভাযাত্রায় অংশ নেন বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, শিপিং এজেন্ট এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।শোভাযাত্রা শেষে বন্দরের জেটির অভ্যন্তরে আয়োজিত আলোচনা সভা শুরু হয় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত, গীতা ও বাইবেল পাঠের মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই সভায় বন্দরের দীর্ঘ ৭৫ বছরের ইতিহাস, চ্যালেঞ্জ এবং বর্তমান উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরা হয়।
মোংলা বন্দরের কার্যক্রমে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ এদিন বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ২৯টি বন্দর ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠানকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে বন্দরের কর্মকাণ্ডে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতি হিসেবে নির্বাচিত সেরা কর্মীদেরও সম্মানিত করে কর্তৃপক্ষ।উল্লেখ্য, মোংলা বন্দর ১৯৫০ সালের ১ ডিসেম্বর খুলনা জেলার চালনা এলাকায় যাত্রা শুরু করে, যা পরে ভৌগোলিক কারণে বাগেরহাটের মোংলায় স্থানান্তরিত হয়। প্রথমে সরকারি অধিদপ্তর হিসেবে শুরু হলেও ১৯৭৭ সালে এটি ‘চালনা বন্দর কর্তৃপক্ষ’ এবং ১৯৮৭ সালে ‘মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’ নামে স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।দীর্ঘ ৭৫ বছরের যাত্রায় নাব্যতা সংকটসহ নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করেও দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে দেশের এই প্রাচীনতম সমুদ্রবন্দর। পদ্মা সেতু চালুর পর সড়কপথে ঢাকার সঙ্গে দূরত্ব কমে আসায় মোংলা বন্দর এখন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সহজে পণ্য পরিবহনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। নৌ, সড়ক ও রেলপথের সুবিধা থাকায় এটি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, নেপাল ও ভুটানের জন্যও দারুণ সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বন্দরকে একটি পরিবেশবান্ধব ও আন্তর্জাতিক মানের ‘স্মার্ট পোর্ট’ হিসেবে গড়ে তোলার সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।















