সর্বশেষ:

মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাগেরহাটে ৩৬ টি বধ্যভূমিতে হত্যা করা হয় ১২ হাজারের বেশি মানুষ

Facebook
Twitter
LinkedIn

আবু হানিফ,বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ

বাগেরহাটে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৩৬টি বধ্যভূমিতে গণহত্যা করা হয় ১২ হাজারের অধিক মানুষকে। পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর জামায়াতে ইসলাম, মুসলিম লীগ, নেজামে ইসলাম, ডেমোক্রেটিক লীগের কমীদের নিয়ে গঠন করা আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকার বাহিনীর হাতে ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে বাগেরহাটে গণহত্যা।

পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৪ এপ্রিল বাগেরহাটে এসে প্রথম দিনেই অর্ধ শতাধিক মানুষকে হত্যা করে। এরপর বাগেরহাট জুড়ে শুরু হয় একর পর এক গণহত্যা। শহরের আমলাপাড়ায় ওয়াপদা রেস্ট হাউজে পাকিস্তান আর্মি ক্যাম্প স্থাপন করে। আর জাময়াতের কেন্দ্রীয় নেতা রাজাকারের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা এ কে এম ইউসুফের নিজ মহকুমা বাগেরহাট শহরের ডাকবাংলায় প্রধান ক্যাম্প করে রাজাকাররা।বাগেরহাট শহরের ডাকবাংলা ঘাটে মহকুমার প্রধান বধ্যভূমিতে দুই হাজারের বেশি মানুষকে গুলি ও জবাই করে হত্যা করা হয়। ডাকবাংলা ঘাট বধ্যভূমিতে রাজাকার আকিজউদ্দিন, সিরাজ মাস্টার ও মজিদ কসাইসহ তাদের দোসরা প্রতিদিনই জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোকজনদের ধরে এনে জবাই করেই সকালের নাস্তা করতো।

এরমধ্যে রাজাকার আকিজউদ্দিন ছিল রামদা স্পেশালিস্ট। রামদা শানাতে শানাতে হাসতে-হাসতে আকিজউদ্দিন প্রতিদিন যাদের জবাই করতো তাদের বলতো ‘ মাটিতে শুয়ে পড়, বাবারা নড়িনে, গলাডা বাড়ায়ে দে- তোরও কষ্ট হবেনা, আমারও কষ্ট হবেনা।’ এভাবে সারি পাতা গলাগুলোর উপর দিয়ে রামদা চালিয়ে হত্যা করে উল্লাস নৃত্য করতো আকিজউদ্দিন, সিরাজ মাস্টার ও মজিদ কসাইসহ তার সহযোগীরা।

বাগেরহাট জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবে কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আসাদুল হকসহ একধিক বীর মুক্তিযোদ্ধারা এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, জেলার ডাকরা বধ্যভূমিতে ১৯৭১ সালের ২১ মে একদিনেই হত্যা করা হয় দুই শতাধিক মানুষকে। এভাবে বাগেরহাট শহরের মোজাম ডাক্তারের চেম্বারের পিছনে নদীরর ঘাট, মোংলা, রামপাল, কচুয়া, মঘিয়া, ভাষা, তেলিগাতি, আঠারোগাতি, শাঁকারিকাঠি, বেতবুনিয়া, মহিষপুরা, সাড়ে চারআনি, মোরেলগঞ্জ, লক্ষীখালী, কান্দাপাড়া, চিতলমারী, দশমহল, পিপড়ারডাঙ্গা, খলিশাখারীর ডাঙ্গা, শরণখোলা, রায়েন্দা, বগী, তেরাবাঁকা, তেতুলবাড়িয়া, গোটাপাড়া, পানিঘাট, খারদ্বার, কাঠালতলা, মোল্লাাহাট, বৈটপুর, রণজিৎপুর, ভট্টখামার, পিলজংগ বধ্যভূমিতে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে হত্যা করা হয় ১২ হাজারের অধিক মানুষকে।স্বাধীনতার এতো বছর পরও বেচেঁ থাকা আল-বদর, আল-শামস ও রাজাকারদের বিচার আজও হয়নি। এখনো এসব বধ্যূভুমিতে এসে স্বজন হারারা তাদের প্রিয়জনদের স্মৃতি হাতড়ে বেড়ায়

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana