আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্য বর্তমানে ভয়াবহ সংকটের মধ্যে রয়েছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া গাজা যুদ্ধের সহিংসতা এখনো থামেনি। এরই মাঝে ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপক হামলা শুরু করেছে, যা মধ্যপ্রাচ্যকে একটি বড় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে।
বিশেষ করে গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এই ১২ দিনে ঘটেছে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক ও সামরিক চিত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। এই ১২ দিনে কী কী ঘটেছে তা এক নজরে দেখা যাক—
১৭ ও ১৮ সেপ্টেম্বর: লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর ব্যবহৃত হাজার হাজার পেজার এবং ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কমপক্ষে ৩৭ জন নিহত হন এবং কয়েক হাজার মানুষ আহত হন। হিজবুল্লাহ ও লেবানন সরকার দাবি করেছে যে এই বিস্ফোরণের পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে।
২০ সেপ্টেম্বর: ইসরায়েল লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর বিভিন্ন ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এতে ৫৫ জন নিহত হন, যার মধ্যে হিজবুল্লাহর একজন শীর্ষস্থানীয় কমান্ডার ছিলেন বলে ইসরায়েলের দাবি।
২৩ সেপ্টেম্বর: ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপক বোমা হামলা চালায়। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, তারা হিজবুল্লাহর ১ হাজার ৩০০টিরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়, এতে ৫৫০ জনের বেশি মানুষ মারা যায়। এটি ছিল গত কয়েক দশকের মধ্যে লেবাননে সবচেয়ে সংঘাতময় দিন।
২৫ ও ২৬ সেপ্টেম্বর: ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে, নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি মিত্র দেশ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। সপ্তাহব্যাপী ইসরায়েলের হামলায় এই সময় পর্যন্ত লেবাননে মৃত্যুর সংখ্যা ৬৩০ ছাড়িয়ে যায়।
২৭ সেপ্টেম্বর: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু হিজবুল্লাহকে পরাজিত করার ঘোষণা দেন। পরে সেদিনই তিনি হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যার নির্দেশ দেন এবং বৈরুতে তার প্রধান কার্যালয়ে বিমান হামলা চালানো হয়।
২৮ সেপ্টেম্বর: শনিবার, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী নাসরুল্লাহকে হত্যার দাবি করে। কয়েক ঘণ্টা পর হিজবুল্লাহও বিষয়টি নিশ্চিত করে। ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সংগঠনটির নেতৃত্বে ছিলেন নাসরুল্লাহ। তার মৃত্যু হিজবুল্লাহ এবং তাদের সমর্থক দেশ ইরানের জন্য একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সূত্র:প্রথম আলো