
মোঃ মনিরুজ্জামান চৌধুরী, নড়াইল প্রতিনিধি :
নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতীর বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে গঞ্জে যুবক,কিশোর এমনকি তরুণরা ও স্মার্টফোন আর অনলাইনভিত্তিক নানা গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এতে চোখের ক্ষতিসহ তাদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। দিন দিন এই মোবাইলের বিভিন্ন গেমসের প্রতি তাদের আগ্রহে একদিকে যেমন যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে যাচ্ছে তেমনি পড়াশুনা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম অন্ধকারে ধাবিত হচ্ছে ও বেড়েছে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ।
তবে অভিভাবকদের অসচেতনতা ও সন্তানদেরকে ঠিকমতো খেয়াল না করার কারনে এই ধরনের অবক্ষয়ে আমরা ধাবিত হচ্ছি বলে সচেতন মহলের অভিমত। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ডুমুরিয়া, নড়াগাতী, খাশিয়াল, মাউলি,কলাবাড়িয়া, বাঐশোনা, যোগানিয়া, পহরডাঙ্গা’র বাগুডাঙ্গা, চাপাইল, মূলশ্রী, চর মধুপুর, বল্যাহাটি, পাখিমারা, কচুয়াডাঙ্গা সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যুবক,কিশোরদের দলবেঁধে মোবাইলে ঝুঁকে থাকার দৃশ্য। যে বয়সে মাঠে খেলাধুলা করার কথা, সেখানে তারা ডুবেছে মোবাইল গেমের নেশায়। পড়াশোনা বাদ দিয়ে দিনের বেশীরভাগ সময়ই তারা নষ্ট করছে গেমিংয়ের পেছনে।
এমনকি মোবাইল গেমের প্রতি এতই আসক্ত যে তারা দায়িত্ব, কর্তব্য, কাজকর্ম ইত্যাদি বাদ দিয়ে সারা দিন মুঠোফোনের পেছনে পড়ে থাকে,বেড়েছে পারিবারিক কলহ। এ ছাড়াও অনলাইনে বাজি খেলার সংখ্যাটাও কম নয়। বিভিন্ন ধরনের বেটিং সাইট তৈরি হচ্ছে কিশোর-তরুনদের টার্গেট করে। ধংস হচ্ছে সমাজ।নড়াগাতীর চাপাইলঘাটে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, কিশোর ও তরুণ বয়সী ছেলেরা প্রতিদিন বাজারের আশপাশে ও ফাকা জায়গায় বসে সকাল থেকে রাত অবধি মোবাইল চাপাচাপি করে। ওরা নাকি কি গেম খেলে। একই এলাকার নিজাম মোল্লা ও অশোক দাশ বলেন, প্রতিদিন বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় বা রাতে কাজকর্ম শেষ করে বাড়ি যাওয়ার সময় দেখা যায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্ররা,ভ্যানচালক,ইজিবাইক চালক,রিকসা চালজ, দিননজুর সকলেই মাঠে, রাস্তার পাশে একত্রিত হয়ে বসে মোবাইলে ফ্রি-ফায়ার নামক গেম খেলছে। আমি এদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত।
পহরডাঙ্গা ইউ চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেও তেমন আশানুরুপ ফল পাচ্ছি না, অভিভাবক ও প্রশাসনের কঠিন পদক্ষেপ ছাড়া এ সমস্যা থেকে উত্তরন করা সম্ভব নয় বলে আমার ধারনা, আমি অবাক হই এত ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের কিভাবে অভিভাবকরা এত দামী / এন্ডুয়েট মোবাইল সেট কিনে দেয় অথচ তাহারা অনেকেই দারিদ্র পরিবারের সন্তান। এলাকার সচেতন মহল হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এসব গেম আসক্তির কারণে পারিবারিক, সামাজিক অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছে। সাথে পড়াশোনায়ও তাদের মনোযোগ কমছে। এই গেমটি অতিরিক্ত খেলার কারণে চোখের সমস্যাও হতে পারে। আর সেই সাথে দেখা দেয় ঘুমের ঘাটতিও। মোবাইলের স্ক্রিনে বেশি সময় ধরে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের ক্ষতি হতে পারে। আর চোখের সমস্যার সাথে ঘুমেরও ঘাটতি দেখা দেয় তাদের মধ্যে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অনলাইল গেম এবং মুঠো ফোন গেমের ক্ষতিকর ব্যবহারকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এলাকার সচেতন মহল এই গেম থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য এবং যুবসমাজকে ধংসের হাত থেকে মুক্তির জন্য প্রসাশনের হস্তক্ষেপ জরুরী কামনা করছেন।