নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের উপসচিব ও তার ওপরে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ ও ক্যাডারভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়েছেন আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। পরিষদের পক্ষ থেকে "রাষ্ট্র সংস্কার: প্রেক্ষিত সিভিল সার্ভিস" শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে আজ শনিবার রাজধানীর পূর্ত ভবন মিলনায়তনে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সভার প্রধান দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদগুলোতে কোটাপদ্ধতি বাতিল করে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ, পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন, প্রশাসন ক্যাডারের সঙ্গে অন্যান্য ক্যাডারের মধ্যে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করা এবং সমতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ প্রদান।
পরিষদ আরও দাবি করে যে, বিভিন্ন ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে হবে এবং সিভিল সার্ভিসে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বৈদেশিক প্রশিক্ষণ ও উচ্চতর শিক্ষাবৃত্তির ক্ষেত্রে সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া, গাড়ির ঋণসুবিধা সহ আরও অনেক প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করারও আহ্বান জানানো হয়।
বক্তারা সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে বলেন, "সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।" কিন্তু প্রশাসন ক্যাডার উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে কোটাপদ্ধতির প্রয়োগ অন্যান্য ক্যাডার সদস্যদের এই সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। তাঁরা আরও বলেন, মেধাবীদের সামনে এগিয়ে আসতে উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উপসচিব হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
অনুষ্ঠানে আলোচকরা আরও বলেন, "প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এর ফলে মন্ত্রণালয়ের কাজ আরও কার্যকর হবে এবং সাধারণ জনগণ এর সুফল পাবে। বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের একচ্ছত্র আধিপত্য অন্যান্য ক্যাডার সদস্যদের কর্মস্পৃহা ক্ষতিগ্রস্ত করছে।" তাঁরা মনে করেন, দক্ষ ও মেধাবী কর্মকর্তাদের সমতা নিশ্চিত করতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোহাম্মদ গোলাম রব্বানি, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক এম এ আজিজ, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সাবেক সভাপতি মো. আবদুস সামাদ, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক আহমেদ ইকবাল চৌধুরী, কৃষিবিদ সালেকুর রহমান, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুর রহমান এবং সম্মিলিত পেশাজীবী সংহতির আহ্বায়ক মির্জা নাজমুল হুদা।
এই দাবি ও সুপারিশগুলো বাস্তবায়িত হলে সিভিল সার্ভিসের দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে এবং কর্মকর্তাদের মধ্যে ন্যায়সংগত পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সূত্র: প্রথম আলো