
মাগুরায় ধর্ষিত আছিয়া ঢাকা মেডিকেলে আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এখনো জ্ঞান ফিরেনি আছিয়ার। ৪৮ ঘন্টা পর্যবেক্ষণের পর শিশু আছিয়ার অবস্থা জানাবেন চিকিৎসক।
বড় মেয়েটার বিয়ে হয়েছিল মাত্র ৪ মাস আগে। মেয়েটা প্রায়ই মাকে এসে বলত ‘মা আমি আর শ্বশুর বাড়িতে যেতে চাই না। মা জিজ্ঞেস করতেন ‘কেন রে মা? কি হয়েছে?’মেয়ে লজ্জা শরম দূরে রেখে বলত- ‘রাতে অন্ধকার থাকলে আমার পেছন থেকে কেউ জড়িয়ে ধরে, বাজেভাবে টাচ করে।’মা তার মেয়েকে সান্ত্বনা দিয়ে বুঝাত- তোর জামাই ই হবে হয়তো।মেয়ে লজ্জায় আর কিছু বলত। শুধু মাকে বলত- মা, আমার জামাই হলে তো আমি টের পেতাম না? বুঝতে তো পারতাম।মা আবারও মেয়েটাকে সান্ত্বনা দিত। অভাবের কারণে মাত্র ১৪ বছর বয়সেই বিয়ে দিতে হয়েছে মেয়েটাকে। বিয়ে হয়েছে মাত্র কটা দিন হলোএখন শ্বশুর বাড়িতে না গেলে লোকে কি বলবে? মানুষের কাছে মুখ দেখাবে কি করে?তাই মা বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বড় মেয়ের সাথে করে ছোট বোনটাকেও পাঠায়। আর সেখানেই শ্বশুর কিংবা স্বামীর হাতে ধ* র্ষি ত হয় ছোট্ট অবুঝ বোনটা। ধর্ষক ও তার পরিবার এখানে ক্ষান্ত হয়নি বিভিন্ন টেলিভিশনের সাক্ষাৎকার এবং আমাদের মানবাধিকার সংস্থা আইন সহায়তা কেন্দ্র ফাউন্ডেশন এর তথ্য অনুযায়ী ছোট বোনের সঙ্গে যখন এই ঘটনা ঘটে এবং তার পর যখন বড় বোন বিষয়টা জেনে যায় তখন ছোট বোনকে ঘরে আটকে রেখে বড় বোনকে অমানবিক শারীরিক নির্যাতন করা হয়। আর সেই তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট মেয়েটি এখন ঢাকা মেডিকেলে আইসিইউতে মৃ ত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে । তথ্য মতে এখনো মেয়েটির জ্ঞান ফেরেনি।
বিষয়টা নিয়ে মাগুরা সহ সারাদেশের সাধারণ জনগণ মাঠে নেমেছে। ধর্ষকের প্রতি সাধারণ মানুষের ধিক্কার ও ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি এই মুহূর্তে সরকারের কাছে একমাত্র চাওয়া। বিভিন্ন স্থানে এই দাবীতে সমাবেশ করছেন সর্বস্তরের সচেতন মানুষ। চৌকস আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাটি প্রকাশের পর হতেই ধর্ষক ও সহযোগীদের গ্রেফতার করতে মাঠে রয়েছেন। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এ পর্যন্ত দুজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে জানা গিয়েছে।
এত বড় আলোচিত কুৎসিত জঘন্যতম ঘটনায় এক সময় হয়তো এই ধর্ষককের পক্ষে ধর্ষককে নির্দোষ প্রমাণ করার জন্য অনেক এডভোকেট আদালতে দাঁড়াবেন। আইনের নানান ফাঁকফোকর দিয়ে ধ* র্ষ *ক হয়তো জামিন পেয়ে বেরিয়ে আসবে। সর্বশেষ ধর্ষকের কতটুকু শাস্তি হবে জানি না। বাচ্চা মেয়েটা ঠিকমতো বিচার পাবে কি-না সেটাও জানি না। কারণ যতটুকু জানতে পেরেছি এই পরিবারের টাকা খরচ করে মামলা পরিচালনা করার মত সামর্থ্য নেই। তাই একসময় আস্তে আস্তে পরিস্থিতি হয়তো শান্ত হয়ে আসবে। আমরাও আর মাথা ঘামাবো না। ছোট বোনটা তো মৃত্যুশয্যাতেই কিন্তু বড় বোনটার হয়তো গরিব মা বাবার কথা চিন্তা করে, সমাজের কথা চিন্তা করে মুখ বুঝে আবারও সংসার করতে যেতে হবে।
গরিব পরিবারের মেয়েটা! সংসার ছাড়া তার আছে টাই বা কি? তারপর হয়তো একদিন রাতে আমরা আবারও নিউজ শুনব- শ্বশুরের কাছে ধ* র্ষ র্ণের শিকার হয়ে এই গরিব পরিবারের মেয়েটা! সংসার ছাড়া তার আছে টাই বা কি? তারপর হয়তো আরেকদিন রাতে আমরা আবারও নিউজ শুনব- শ্বশুরের কাছে ধ* র্ষ র্ণের শিকার হয়ে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে মাগুরার এক মেয়ে…! এটাই আমাদের চিত্র। আমরা সাময়িক হুজুগী । এই বয়সে কখনই দেখি নাই আমাদের কোন স্থায়ী কার্যকরী পদক্ষেপ। জানিনা আল্লাহ তুমি এ বাঙালি জাতির আর কবে বিবেক ও বিবেচনা শক্তি খুলবে বা আদৌ খুলবে কিনা! কথা দিচ্ছি এই মেয়েটির প্রতি অন্যায়ের জন্য ধর্ষক ও ধর্ষকের সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিচার নিশ্চিত করার জন্য আদালতে বিচার কার্যক্রমের শেষ পর্যন্ত আইন সহায়তাকারী সংস্থা এই মেয়েটির পরিবারের পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ। ইতিমধ্যে আমাদের মাগুরা জেলা কমিটির সদস্য বৃন্দ গঠনাস্থলে গিয়েছেন এবং সার্বিক খোঁজ খবর রাখছেন।