
পাইকগাছা ( খুলনা ) প্রতিনিধি
পাইকগাছার কপিলমুনি জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার দুর্নীতিবাজ বহু অপকর্মের হোতা অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের অপসারণের দাবিতে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের লাগাতার ধর্মঘট চলছে। মাদ্রাসার জমি দাতা, শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার জমি দানের কথা বলে নিজের নামে সল্পমুল্যে জমি লিখে নেওয়া, শিক্ষক নিয়োগে লাখ লাখ টাকা আত্মসাত, শিক্ষক নিপীড়নের ঘটনায় লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার (২৬ এপ্রিল) তদন্তের প্রমানিত হলেও এখনো বহাল তবিয়তে আছেন অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার। তার অপসারণের দাবিতে শিক্ষক শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল অব্যহত রেখেছেন। রবিবার থেকে লাগাতার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন সোমবার সকালে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে অবস্থান ধর্মঘট ও বিক্ষোভ মিছিল করেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের এক দফা এক দাবি দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের অপসারণ। যতক্ষণ পর্যন্ত অপসারণ না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের ক্লাস বর্জন ও ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।
জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ৯ম শ্রেনীর ছাত্র মুহতাসিম বিল্লাল লাবিব জানায়, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার আমাদের শিক্ষকদের নিপীড়ন করেছেন। মাদ্রাসায় সকালে হাজির দিয়ে চলে যান কবিরাজি ব্যাবসায়। ৯ম শ্রেনীর ছাত্রী তাহমিনা খাতুন জানায়, সরকার আমাদের সুন্দর একটি বিল্ডিং করে দিয়েছেন। দাতারা জমি মাদ্রাসায় দান করলেও তিনি নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। আমাদের মাদ্রাসার জমি ফেরত দিতে হবে। মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষিকা কাকলি ঠিকাদার বলেন, অধ্যক্ষ তার রুমে আয়ার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার সময় আমি দেখে প্রকাশ করায় বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি তার অপসারণের দাবি জানাই। গণিত শিক্ষিকা হোসনে আরা খাতুন জানান, আমাকে বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তার অপসারণের দাবি জানাই।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক প্রতিনিধি মোঃ জামিরুল ইসলাম বলেন, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরের দেওয়া অভিযোগ স্বীকার করেছেন। কিন্তু এখনো তিনি বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি বলেছেন, টাকা দিয়ে সব কিছু ঠিক করে নিবেন। আমরা তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়। উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মীর নূরে আলম জানান, সোমবার সকালে আমি মাদ্রাসা পরিদর্শন করেছি। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন ও লাগাতার ধর্মঘট বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন বলেন, বিষয়টি আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
উল্লেখ্য গত শনিবার অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মানববন্ধন ও দুর্নীতির অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত আসেন, জাফর আউলিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার সভাপতি ও খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল. এ) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা) এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি)নূরুল হাই মোহাম্মদ আনাছ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহেরা নাজনীন ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ শাহাজান আলী।