ডুমুরিয়া প্রতিনিধি
ডুমুরিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়নের খলশী গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান সরদারের মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে সাদিয়া খাতুন (১১) মায়ের উপর অভিমান করে গলায় ওড়নার ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। ডুমুরিয়া থানায় এ ব্যাপারে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় তদন্ত শেষে শিশুর লাশ দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে থানা পুলিশ নিশ্চিত করেছেন।
পরিবার ওই এলাকাবাসী সুত্র জানান কৃষক মতিয়ার রহমান সরদারের তিন ছেলে মেয়ে। বড় মেয়ে মার্জিয়া সুলতানা (১৪)উপজেলার হাজিডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী ।সাদিয়া মেঝসহ সিয়াম নামের একশিশুপুত্র রয়েছে।
সাদিয়া স্থানীয় খুলশি মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে লেখাপড়া করে। প্রতিদিন সকালে না খেয়ে পড়তে যাওয়ার কারণে তার পিতা রোববার এক প্যাকেট বিস্কুট কে শিশু সাদিয়ার মা কুলসুম বেগমকে বলে সকালে সাদিয়া বিস্কুট খেয়ে পড়তে যাবে।
সোমবার সকালে সাদিয়া বিস্কুট না খেয়ে আরবি পড়তে মাদ্রাসায় যায়।
বেলা প্রায় আটটার দিকে বাড়ি ফিরে মায়ের কাছে বিস্কুট খাওয়ার বায়না ধরে। এদিকে বড় বোন ও ছোট ভাই মিলে বিস্কুট খেয়ে ফেলে। মা কুলসুম বেগম বিস্কুট ঘরে আছে বলে তাকে জানায়। ঘরে অনেক খোঁজাখুঁজির পর বিস্কুট না পেয়ে শিশু সাদিয়া কান্নাকাটি করতে থাকে।
এ সময় মা তাকে বকুনি দেয়। এ সময়ে সে রেগে গিয়ে ঘরের দরজা দিয়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। একপর্যায়ে সে নিজের ওড়না ঘরের আরার সাথে ফাঁস তৈরি করে ঝুলে পড়ে। এদিকে তার মা ভাত খেতে ডাকতে থাকে। কোন সারা শব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে ডাকাডাকি করতে থাকে। একপর্যায়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে শিশু সাদিয়াকে ঝুলতে দেখে। এ দৃশ্য দেখে শিশু সাদিয়ার মার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
এ সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সাদিয়ার সহপাঠীরা এক নজর দেখার জন্য তার পিতালয়ে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েতে দেখা যায়।স্থানীয় মহিলা ইউপি সদস্য আরজিনা বেগম ও সাদিয়ার দাদি মসজিদে বেগম জানান শিশু সাদিয়া অত্যান্ত রাগী স্বভাবের তবে মেধাব।
ডুমুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদ রানা জানান তদন্ত শেষে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ না থাকায় শিশুর লাশ তার পরিবারের কাছে দাফনের জন্য হস্তান্তর করা হয়েছে।