
নিউজ ডেস্ক
খুলনা, বাংলাদেশ: খুলনা নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে অবস্থিত অস্থায়ী ঈদ মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৯ মার্চ) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মুহূর্তের মধ্যেই আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং পুরো মার্কেট পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
৪৪টি দোকান পুড়ে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বছর আগে ভেঙে ফেলা পিকচার প্যালেস সিনেমা হলের জমিতে ৪৪টি অস্থায়ী দোকান গড়ে ওঠে। এসব দোকানের মধ্যে কাপড়, কসমেটিকস, জুয়েলারি, প্লাস্টিক সামগ্রী এবং ক্রোকারিজের ব্যবসা ছিল। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দোকানিরা নতুন পণ্য তুলছিলেন, যা আগুনে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটের নিরলস প্রচেষ্টা
খবর পেয়ে খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা জানান, ভোর সাড়ে ৫টা থেকে প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় সকাল ৬টা ১০ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ: অস্থায়ী মার্কেটের নিরাপত্তা ঝুঁকি
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানান, ভেঙে ফেলা পিকচার প্যালেস হলের জমিতে ‘পিকচার প্যালেস সুপার মার্কেট’ নাম দিয়ে তারা দোকান চালু করেছিলেন। তবে মার্কেটটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত হওয়ায় সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ, দাহ্য বস্তু সংরক্ষণ ও অগ্নিনিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না। এর ফলে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, এবং ব্যবসায়ীরা কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারেননি।
পুলিশ ও প্রশাসনের তৎপরতা
খুলনা সদর থানার ওসি সানোয়ার হোসেন মাসুম জানান, “আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। প্রাথমিকভাবে বেশ কিছু দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে তদন্ত চলছে।”
আগুনের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তদন্তাধীন
ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসন যৌথভাবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্ত করছে। প্রাথমিকভাবে শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না, তবে ব্যবসায়ীদের অনেকে নাশকতার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের আহ্বান
ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছেন। একজন ব্যবসায়ী বলেন, “ঈদ সামনে, আমরা বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছি। যদি প্রশাসন কোনো সহায়তা না দেয়, তবে আমাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে।”
উল্লেখ্য: অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা তাদের ব্যবসা পুনরুদ্ধারে সরকারের সহায়তা কামনা করছেন।