বিশেষ প্রতিনিধি :
ঢাকা: দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এই পরিমাণ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে বাংলাদেশ ব্যাংক। ঋণ খেলাপীদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স স্থগিতসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে নতুন ঋণগ্রহিতারাও একই পথে হাটবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংকিং খাতে ঘটে যাওয়া লুটপাটের ভয়াবহ চিত্র সামনে এসেছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছে। দেশের সরকারি বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বর্তমানে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। টাকা তুলে নিয়ে ফেরত না দেয়ায় ব্যাংক খাত এখন অনেকটাই ঝুঁকির মুখে। বর্তমানে ব্যাংক ঋণের ৭৫ শতাংশই নিয়ে গেছেন এক শতাংশ হিসাবধারী, যারা মূলত কোটিপতি ব্যবসায়ী।
পরিসংখ্যান বলছে- রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকের ৭৫ শতাংশ ঋণই এখন খেলাপি। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭৪ হাজার কোটি টাকায়। ব্যাংটির আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ১১ হাজার ৭৪৯ কোটি টাকা। সেখান থেকে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ৯৮ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এই অর্থের অর্ধেকের বেশি ৪৯ হাজার কোটি টাকা নিয়েছে মাত্র ৫টি গ্র“প কোম্পানী। এর মধ্যে এককভাবে সালমান এফ রহমানের বেক্সিমকো গ্র“পই নিয়েছে ২৫ হাজার ৮০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানান, ব্যাংক কোম্পানী আইন অনুযায়ী ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এছাড়া ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খেলাপী ঋণ দ্রুত আদায় ও ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর অবস্থান যৌক্তিক বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। জুলাই থেকে আগষ্টের প্রথম সপ্তাহে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল থাকায় ব্যাংকের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমেছিলো। আশঙ্কাজনক হারে কমে গিয়েছিল লেনদেন। ব্যাংক আমনাত কমেছে ১১ হাজার কোটি টাকা।