সর্বশেষ:

kashmir hamla theke ki poramanu songhorsho gorabe

কাশ্মীর হামলা থেকে শুরু হওয়া উত্তেজনা কি পরমাণু সংঘর্ষে গড়াবে (ভারত ও পাকিস্তান)?

kashmir hamla theke ki poramanu songhorsho gorabe
Facebook
Twitter
LinkedIn

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০২৫ সালের মে মাসে দক্ষিণ এশিয়ার দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী—ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে আবারও সামরিক উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এই উত্তেজনার সূচনা হয় ২০২৫ সালের ২২ এপ্রিল, যখন ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহালগামে একটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় কমপক্ষে ২৮ জন নিরীহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিল হিন্দু তীর্থযাত্রী। এই হামলার দায় স্বীকার করে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’, যা পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইয়্যেবা দ্বারা সমর্থিত বলে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা দাবি করেছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারতীয় সরকার কড়া অবস্থান নেয় এবং ৭ মে থেকে শুরু করে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ব্যাপক সামরিক অভিযান চালায় যার কোডনেম ছিল “অপারেশন সিন্ধুর”। এই অভিযানে ভারতীয় বিমানবাহিনী ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীর ও খাইবার পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে জইশ-ই-মোহাম্মদ ও লস্কর-ই-তইয়্যেবার অন্তত ১৪টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে বিমান হামলা চালায়। এই হামলাগুলো ছিল অত্যন্ত নির্ভুল এবং লক্ষ্যভেদী, যেখানে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়। ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, এসব হামলা ছিল প্রতিরোধমূলক এবং এর উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তানকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সমর্থন বন্ধে বাধ্য করা।

varot pakistan hamla

অন্যদিকে, পাকিস্তান এই হামলাকে তাদের সার্বভৌমত্বের ওপর আগ্রাসন বলে উল্লেখ করে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে তারা অন্তত ২৫টি ভারতীয় ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে এবং পাল্টা হামলায় ৫০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনী জানায়, ভারতের হামলায় তাদের ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয় এবং বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। তারা তাদের নিজস্ব বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করে সীমান্ত অঞ্চলে যুদ্ধ-সদৃশ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

এই ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনা ঘিরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়েছে। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া উভয় পক্ষকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সরাসরি কূটনৈতিক হস্তক্ষেপের প্রস্তাব দিয়েছে। তবুও, এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতির কোনো কার্যকর উদ্যোগ সফল হয়নি।

এই উত্তেজনার জেরে ভারত ও পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করেছে, বাণিজ্য চুক্তি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে এবং উভয় দেশেই পর্যটন ভিসা পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। একইসাথে, উভয় দেশের বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত অন্তত ২৭টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে বন্ধ করেছে এবং পাকিস্তান করাচি, লাহোর ও সিয়ালকোটের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিমানবন্দর থেকে ফ্লাইট স্থগিত করেছে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে এই সংঘাত যদি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাহলে তা পরমাণু যুদ্ধের দিকে গড়াতে পারে—যার পরিণতি হবে বিশ্বব্যাপী ধ্বংসাত্মক। যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ভারত-পাকিস্তান পরমাণু সংঘর্ষে তাৎক্ষণিকভাবে ১২.৫ কোটিরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটতে পারে এবং পৃথিবীর জলবায়ু ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

বর্তমানে উভয় দেশেই সীমান্তে সেনা মোতায়েন বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন। সামাজিক মাধ্যমে #IndiaPakistanConflict এবং #NuclearTensions ট্রেন্ড করছে।

এই পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক মহলের সক্রিয় হস্তক্ষেপ এবং উভয় দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের কৌশলী ও দায়িত্বশীল ভূমিকা এখন অত্যন্ত জরুরি।

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana