নড়াইল প্রতিনিধি
নড়াইলের কালিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই প্রতিযোগিতা। এই মোরগ লড়াইকে ঘিরে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে উৎসুক জনতা। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের নোয়াগ্রাম খেলার মাঠে এই মোরগ লড়াই অনুষ্ঠিত হয়। লড়াইয়ে বিভিন্ন এলাকার শতাধিক মোরগ অংশ নেয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই আয়োজনে বিভিন্ন এলাকার অংশ নেয়া প্রতিযোগি মোরগের মধ্যে থেকে এক এক বারে দুটি করে মোরগ লড়াইয়ে অংশ নেয়। কয়েক মিনিট ধরে নানাভাবে লড়াই চলতে থাকে। লড়াইয়ের এক পর্যায়ে পরাজিত মোরগগুলো একে একে তার মালিকের কাছে ফিরে যায়। বিজয়ী মোরগগুলোকে কোলে নিয়ে মালিকরা উল্লাস করতে থাকেন। শিক্ষার্থী,শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধ থেকে শুরু করে নানা বয়সের মানুষ দেখতে আসেন এই মোরগ লড়াই। কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও আনন্দে মেতে ছিলেন দর্শনার্থীরা। বিভিন্ন গ্রামের শতশত উৎসুক জনতা এই মোরগ লড়াই দেখতে আসেন। প্রতিযোগিতামূলক এই লড়াইয়ে অংশ নেয়া মোরগের মালিকরাও বেজায় খুশি এই আয়োজনে।
মোরগ লড়াইয়ের এই প্রতিযোগিতা শেষে অনিক হোসেনের কিং ও মো.আকাশের পুষúা রাজ নামের দুটি মোরগ প্রথম ও দ্বিতীয় হিসেবে বিজয়ী হয়। তাদেরকে পুরস্কার হিসেবে খাসি উপহার দেয়া হয়।
আয়োজকদের পক্ষে মহিদুল ইসলাম (৬০) নামের স্থানীয় এক প্রবীণ ব্যক্তি জানান, এক সময় গ্রামগঞ্জের ঐতিহ্য ছিল এই মোরগ লড়াই। এখন খুব একটা দেখা মেলে না এ ধরনের আয়োজনের। লড়াই চলাকালে একটি মোরগ অপর একটি মোরগকে নানা কৌশলে পরাস্ত করেছে। লড়াইয়ে অংশ নেয়া প্রতিটি মোরগই বিজয়ী হওয়ার জন্য চেষ্টা করেছে উল্লেখ করে ভবিষ্যতেও এ আয়োজন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রহমত উল্লাহ নামের একজন দর্শনার্থী জানান, বিভিন্ন সময়ে মোরগ লড়াইয়ের কথা শুনলেও, এই প্রথম মোরগের লড়াই দেখতে আসা হয়। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী একাধিক রাউন্ডের এই লড়াই দেখে আনন্দ পেয়েছি। বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের মোরগ লড়াই আয়োজনের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, টিপু সুলতান, স¤্রাট আকবরসহ অনেক রাজা এই মোরগগুলো শখ করে পুষতেন বলে একে রাজকীয় মোরগও বলা হয়। আগেরকার দিনের রাজা-বাদশারা এদের লড়াই দেখাটাকে বিনোদনের অংশ হিসেবে নিতেন।
তবে, এখন এই খেলাটি বাংলাদেশে তেমন দেখা না গেলেও তুরস্কের জাতীয় খেলা কিন্তু এই মোরগ লড়াই। ভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার, জাপানেও এই খেলার প্রচলন রয়েছে।