মোঃ মনিরুজ্জামান চৌধুরী
কালিয়া (নড়াইল)
নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খেটে খাওয়া ও স্বল্প আয়ের বহু পরিবারের ঘরে চুলো জ্বলছে না। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, রিকশা ও ভ্যানচালকসহ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ।
উপজেলার নড়াগাতী থানার কলাবাড়িয়া, বাঐশোনা, মাউলী, খাশিয়াল ও পহরডাঙ্গা ইউনিয়নে শীতের প্রকোপ তুলনামূলকভাবে বেশি দেখা যাচ্ছে। ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মিলছে না। এতে কৃষিকাজ, নির্মাণকাজ ও যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফলে শ্রমজীবী মানুষের আয় প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষিজমিতে কাজ না থাকায় কৃষিশ্রমিকদের উপার্জন বন্ধ রয়েছে। রিকশা ও ভ্যানচালকরাও যাত্রী সংকটে পড়েছেন।
রিকশাচালক দুলাল রবিদাস বলেন, “কাজ না থাকায় বাজার করা সম্ভব হচ্ছে না। অনেক দিন ধরেই সংসারে ঠিকমতো রান্না হচ্ছে না।”
শীতের কারণে শিশু ও বয়স্করা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। পাশ্ববর্তী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে। তবে অর্থের অভাবে অনেক পরিবার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছে না। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে অনেককে পাতলা কাপড় পরেই ঠান্ডার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে।
হতদরিদ্র রমজান সরদার জানান, এখনো প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে পর্যাপ্ত সরকারি বা বেসরকারি সহায়তা পৌঁছায়নি। কিছু এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।
পহরডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মল্লিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, প্রবল শীতে এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষ চরম অমানবিক জীবন যাপন করছে। তিনি স্থানীয় বিত্তবানদের দ্রুত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে শীতবস্ত্র ও খাদ্য সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানান।
এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত উপজেলার দুর্গম ইউনিয়নগুলোতে শীতবস্ত্র, কম্বল ও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি শ্রমজীবী মানুষের জন্য বিশেষ সহায়তা কর্মসূচি গ্রহণ করা হোক। অন্যথায় কনকনে শীতে দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।