নিউজ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমালা হ্যারিসের মধ্যে কে জয়ী হবেন, তা শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্যই নয়, বরং বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বিশেষ করে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পের সাম্প্রতিক একটি টুইটের পরিপ্রেক্ষিতে এই আলোচনা আরও তীব্র হয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে অতীতে মার্কিন নেতাদের বিশেষ করে ডেমোক্র্যাট দলের নেতাদের ভালো সম্পর্ক ছিল। তাই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমালা হ্যারিসের জয় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে সহায়ক হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাট প্রশাসনের মনোভাব বরাবরই ইতিবাচক। কমালা হ্যারিস যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তবে বাংলাদেশ এইসব ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা এবং সমর্থন পেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিশেষজ্ঞ মাইকেল কুগেলম্যানের মতে, হ্যারিস জয়ী হলে বর্তমান কূটনৈতিক সম্পর্কের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে। কিন্তু ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে এই পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফল বাংলাদেশের জন্য নানা পরিবর্তন আনতে পারে। আমার মনে হয় না ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমান সম্পর্কের কাঠামোকে সমর্থন করবেন, যেখানে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতায় সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসন মানবিক ও উন্নয়ন সহযোগিতার প্রতি খুব একটা আগ্রহী নাও হতে পারে।”
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির মনে করেন, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে আমেরিকার মানবিক সহযোগিতার জায়গায় প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকটের ক্ষেত্রে। রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের মাধ্যমে যে সহায়তা বাংলাদেশ পায়, তার একটি বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে। তিনি বলেন, “ট্রাম্পকে আমেরিকার ইতিহাসে প্রথাগত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখা হয় না। তার বিদেশ নীতির বৈশিষ্ট্য অনেকটাই অনিশ্চিত।”
প্রেসিডেন্ট বদল হলেও সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতিতে খুব বড় পরিবর্তন হয় না, কারণ এর পিছনে দেশের প্রতিষ্ঠান ও কাঠামোগুলোর শক্তিশালী ভূমিকা থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এঅ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহনাজ মোমেন বলেন, “ট্রাম্পের প্রচারণায় কিছু প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। এ ধরনের পরিবর্তন বৈদেশিক নীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে। তবে তা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।”
এই নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের উপর কী প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে বিশ্লেষকরা সতর্ক।
সূত্র:BBC NEWS Bangla