
এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ,পাইকগাছা, (খুলনা )
আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে জমিন দিয়ে চলা দু’চাকার হেলিকপ্টার। এখন আর দেখা মেলে না, পায়ে চালানো সেই হেলিকপ্টার গুলো প্রায় তিন যুগ পূর্বেও দেখা যেত বাংলাদেশের দক্ষিণে খুলনা, সাতক্ষীরা, তালা, পাটকেলঘাটা, যশোর, মনিরামপুর, কেশবপুর, কপিলমুনি, পাইকগাছা, কয়রা সহ অত্র অঞ্চলে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে দেখা যেত এই সাইকেল হেলিকপ্টার। সাইকেলের পিছনে ছিট বেঁধে হেলিকপ্টার তৈরি করে মানুষকে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেত চালক। কিন্তু বর্তমানে কালের বিবর্তনে যান্ত্রিক বাহন বিকাশের কারণে হারিয়ে গেছে অত্র অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী হেলিকপ্টার। এখন এলাকায় আর সেই দুই চাকার হেলিকপ্টার দেখা যায় না।
আশি-নব্বই দশকে বাংলাদেশের খুলনা, সাতক্ষীরা, যশোর, বাগেরহাট অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী যান যেটি হেলিকপ্টার নামে পরিচিত ছিল, আধুনিকতার বিবর্তনে সেটি হারিয়ে গেছে। নতুন প্রজন্মের কাছে এটি শুধুই ইতিহাস!
খুলনার পাইকগাছা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের আমজাদ গাজী ( ৬৫ ) নামের এক ব্যবসায়ী বলেন তিন যুগ আগেও এই সাইকেল হেলিকপ্টারে আমরা দুর দুর্দান্তর পথ পাড়ি দিতাম। তখনকার সময় টাকার মূল্য ছিলো, পাঁচ-দশ টাকায় পনেরো থেকে বিশ কিলোমিটার পথ যাওয়া যেত।আর এখন উন্নত প্রযুক্তির সব যানবাহন চলাচলে এই হেলিকপ্টার গুলো বিলীন হয়ে গেছে। এখন আর দেখা যায় না। বর্তমানে টাকার মূল্য নেই এখন সেই পনেরো-বিশ কিলোমিটার যেতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। তবে উন্নত সব যানবাহনে দ্রুত সময়ে পৌঁছানো যায়।
পাইকগাছা পৌর সদরের বান্দিকাটী গ্রামের ইজিবাইক চালক বরকত উল্লাহ ( ৬৮ ) বলেন, আশি-নব্বই দশকের মানুষ অভাবগ্রস্ত ছিল,যারা একটু গরিব ছিলো তারা সাইকেলর পিছনের ক্যারিয়ালে ফোম জাতীয় কিছু বসিয়ে এবং সামনের রডে তোয়ালে জাতীয় কিছু পেঁচিয়ে দুই জন কে বহন করতো। আর সেটা থেকে যেটা আয়রোজগার করতো সেটা দিয়ে সংসার চলতো। কিন্তু এখন আর জমিন দিয়ে চলা দু’চাকার হেলিকপ্টার দেখা মেলে না। উন্নত প্রযুক্তির যানবাহন চলাচলে এখন দুই চাকার হেলিকপ্টার বিলীন হয়ে গেছে।
অন্যান্য জেলা উপজেলা থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে লোকজন আসলে হেলিকপ্টারে যাওয়ার কথা বললে অবাক হতো। যারা জানতো না যে সেই হেলিকপ্টার জমিন দিয়ে চলতো। অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করলেও আবার অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করতেন না। সময়ের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে সেই জমিন দিয়ে চলা দু’চাকার হেলিকপ্টার।