বিশেষ প্রতিনিধি :
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি ইউনিয়নেজমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ ও পূর্ব শত্রুতার জেরে গ্রাম পুলিশের দফাদার মো : আবু জাফর বিশ্বাস (৫০) এর উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় জাফর বিশ্বাস খুলনা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার গাওঘরা এলাকায় আবু জাফর বিশ্বাসের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।বর্তমানে গুরুতর আহত জাফর বিশ্বাস খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, বুকে ও মাথায় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করা হয় জাফরের ওপর। তার বুকে পাঁচটি এবং মাথায় আটটি সেলাই দিতে হয়েছে। হামলায় তার স্ত্রী ছেলে পত্নী ও নাতনি সহ একাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত জাফর বিশ্বাস জানান, ঘটনার দিন নানীর মালিকানাধীন একটি জমির মাপঝোপ করার কথা ছিল।
সে অনুযায়ী সার্ভেয়ার সহ কয়েকজন স্থানীয় লোকজন তাদের বাড়িতে আসেন। দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে সাঈদ পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল। তারই জের ধরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মোঃ শহিদুল ইসলাম সাহিদ সহ ৫/৭ জন লোকজন তাদের বাড়িতে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় এবং বাড়িঘর ভাঙচুর করে। দেশীয় অস্ত্র, বাঁশের লাঠিসোটা নিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। দফাদার জাফর বিশ্বাসের ছেলে মেহেদী হাসান বাদী হয়ে শনিবার বিকালে থানায় মো : সাহিদ বিশ্বাস (৪৫), জাহিদ বিশ্বাস (৪০), সালমান বিশ্বাস (২৬), সোহেব বিশ্বাস (২৩), সুরুজ্জামাল বিশ্বাস (৩৫), আজমিন বিশ্বাস (৩০), এবং কুদ্দুস বিশ্বাসকে আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রত্যক্ষদর্শী মো: হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনার সময় আমি তাদের বাড়িতে ছিলাম। হঠাৎ সাঈদ মোটরসাইকেল নিয়ে এসে জানায়, আগে তার সমস্যার সমাধান না হলে এখানে কোন মাপঝোপ হবে না। একপর্যায়ে সে জাফরকে ঘুষি মারে। তারপর আমি সেখান থেকে চলে আসি। রাস্তায় আসতে দেখি সাঈদের ভাই ব্রাদার ও লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের বাড়ির দিকে যাচ্ছে। পরে শুনলাম জাফরকে তারা বেধড়ক মারধর করেছে। সুরখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ জাকির হোসেন লিটু বলেন, দফাদার জাফরের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিবাদী ছিলো জাফর দফাদারের মামাতো ভাইর। তাদের বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গ্রাম আদালতে জমি আমিন দ্বারা পরিমাপ করিয়া যার যার অংশ বুঝিয়া নিতে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। সে মোতাবেক সার্ভেয়ার সহ স্থানীয় লোকজন পরিমাপ করতে গেলে শাহিদ নামের ছেলেটা সেখানে গিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটায়। কেন এমন অঘটন ঘটল তা বোধগম্য নয়। আমি উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি একটি ব্যক্তিগত জমিজমা ইস্যু। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে সমাধান হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ বাইরের কারা এসে তাকে মারধর করেছে। আপাতত তার চিকিৎসার দিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। তিনি সুস্থ হলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বটিয়াঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আব্দুর রহিম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।