আশরাফুজ্জামান সরকার,গাইবান্ধাঃ-
গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জে কাটাখালি নদীর তীর থেকে বালু মাটি কাটার সময় চাপা পড়ে আব্দুল ওয়াহেদ (৩৪) নামের এক শ্রমিকের করুণ মৃত্যু হয়েছে।
২৩ ডিসেম্বর সোমবার সকাল ৮টার দিকে উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের চন্ডিপুর (সমসপাড়া) গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল ওয়াহেদ চন্ডিপুর গ্রামের মৃত দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা ভূমিদস্যু আব্দুর রউফের ছেলে মেহেদুল, আব্দুল মুন্নার ছেলের আনিসুর ও আব্দুল মজিদের ছেলে সোত্বাকিন মিলে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে কাটাখালি নদী বালু উত্তোলন ও নদীর পাড় থেকে মাটি খনন করে বিক্রি করে আসছিল। ঘটনার দিন ভোর থেকে তারা কাটাখালি নদীর পাড়ে হালিম প্রধানের জমি থেকে মাটি কেটে আপেলের ট্রাক্টর দিয়ে বহন করছিল। সকাল ৮টার দিকে মাটি কাটার সময় হঠাৎ উপরের মাটি ভেঙ্গে পাশে থাকা ট্রাক্টরসহ ওয়াহেদের গায়ের উপরে পড়ে। এতে মাটি ও ট্রাক্টর চাপা পড়ে ওয়াহেদ গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা ওয়াহেদকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় এক বৃদ্ধা সাংবাদিকদের জানান, মাসের পর মাস ধরে নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ভূমিদস্যুরা কিন্তু আমরা এলাকাবাসী প্রাণের ভয়ে তাদের বাঁধা দিতে পারছি না। এবিষয়ে প্রশাসন থেকে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ফলে হরহামেশাই এমন দূর্ঘটনা ঘটেছে। এর আগে একটি শিশু ট্রাক্টর চাপা পড়ে মারা গিয়েছে। তখনও প্রশাসন থেকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি।
এবিষয়ে নদীর তীরবর্তী উক্ত জমির মালিক চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বিশুবাড়ি মাদ্রাসার শিক্ষক (মৌলভি) হালিম প্রধান বলেন, উচু জমিতে চাষবাসের সমস্যা হওয়ার কারনে মেহেদুল, আনিসুর ও সোত্বাকিন মিলে জমির মাটি ৭ ফিট কেটে জমি সমান করার কাজ নেয়। কিন্তু তারা জমির মাটি অতিরিক্ত কেটে গর্ত সৃষ্টি করায় এ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। আমি শিক্ষকতা ও চাষবাসের কাজে ব্যস্ত থাকায় এবং আমার বাড়ি থেকে জমিটি অনেক দূরে হওয়ায় সেখানে নিয়মিত কাজের অগ্রগতি দেখতে যেতে পারিনি। দূর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি সরেজমিনে দেখতে পেলাম।
গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বুলবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আব্দুল ওয়াহেদ নামে এক শ্রমিকের মাটি চাপায় মৃত্যু হয়েছে। তবে নিহতের পরিবার থানায় কোন অভিযোগ করেনি। তাদের দাবীর প্রেক্ষিতে নিহতের মরদেহ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে। এঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলার প্রস্তুতি চলছে।