
ডেস্ক নিউজ
ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোডস রয়েলস বাসে ডাকাতি এবং শ্লীলতাহানি ঘটেছে, তবে ধর্ষণের কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মিজানুর রহমান জানিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে, ঘটনার পরপরই তদন্ত শুরু হয়েছে এবং প্রাথমিকভাবে বিষয়টি পরিষ্কার করা হয়েছে।
পুলিশ সুপারের বক্তব্য:
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে টাঙ্গাইল জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান তার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি যে, ওই বাসে কোনো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেনি। ডাকাতরা নারীদের গায়ের কাছে স্পর্শ করেছে যখন তারা নাকফুল ও কানের দুল চুরি করছিল। এটি শ্লীলতাহানি হিসেবে গণ্য হতে পারে।”
এসপি আরও বলেন, “আমরা ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনা:
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি, সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ইউনিক রোডস রয়েলস বাসে ডাকাতি হয়। মির্জাপুরের কাছে এই ডাকাতির সময় দুটি নারী যাত্রীকে শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ ওঠে। এ সময় ডাকাতরা তাদের নাকফুল ও কানের দুল নিয়ে যায়, এবং যাত্রীদের অভিযোগ অনুযায়ী, গায়ে স্পর্শ লেগেছিল। পুলিশ এই ঘটনায় একটি শ্লীলতাহানি মামলা রুজু করেছে।
কর্তব্যে অবহেলা:
ঘটনার পর, কর্তব্যে অবহেলা এর জন্য মির্জাপুর থানার ওসি আতিকুজ্জামানকে বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, থানার কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা পুনরায় না ঘটে।
অভিযান ও গ্রেফতার:
ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগে সাভার এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তিনটি মোবাইল ফোন, একটি ছুরি, এবং ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা। গ্রেফতারকৃতরা হলেন:
- মো. শহিদুল ইসলাম (২৯)
- মো. সবুজ (৩০)
- মো. শরীফুজ্জামান (২৮)
পুলিশ জানিয়েছে, তাদের রিমান্ডে নেওয়া হবে, এবং তদন্তের মাধ্যমে তাদের অপরাধের সঙ্গে অন্যদের সম্পর্কের বিষয়েও আরও তথ্য পাওয়া যাবে।
প্রাথমিক তদন্ত ও মামলা:
ঘটনার পর তিন দিন, শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার মো. ওমর আলী (৫০) এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় ৮-৯ জন অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে যে, ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশের পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান আরও জানান, তাদের তদন্ত চলমান এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি জানান, প্রযুক্তির সাহায্যে এবং বিভিন্ন সোর্স ব্যবহার করে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পুলিশ আরও সতর্ক থাকবে।