সর্বশেষ:

bon korkokortake taka diye mach shikar jele atok

বন কর্মকর্তাকে টাকা দিয়ে অভয়রণ্যে মাছ শিকার শেষ রক্ষা হল না সাত জেলের

bon korkokortake taka diye mach shikar jele atok
Facebook
Twitter
LinkedIn

ইমরান হোসেন জাকি কয়রা প্রতিনিধি:

খুলনার পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনা রেঞ্জের ভোমর খালি টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে অভয়ারণ্যে মাছ ধরার সুযোগ করে দেওয়াসহ জেলেদের হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় জেলে রজব আলী । রজব আলী অভিযোগ তোলেন তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে আব্দুল হাকিম তাদের ১০ জেলেকে অভয়রণ্যে মাছ ধরার সুযোগ করে দেন পরে অন্য দালাল চক্রের মধ্যে অন্য জেলেদের থেকে বেশি টাকা নিয়ে অভয়রণ্যে মাছ ধরার সুযোগ দিয়ে অলিখিত চুক্তির পরেও তিনি তাদের জেলেদের আটক করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন। টাকা না দেওয়ায় ২ দিন আটকে রেখে মামলা দেন।

সোমবার(৬ অক্টোবর) কয়রা প্রেস ক্লাবে উপস্থিত হয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বজব আলী ভোমর খালির টহল ফাড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়াসহ হয়রানির অভিযোগ তোলেন।

সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ শিকার নিষিদ্ধ। কিন্তু ওই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ওইসব এলাকায় অবাধে চলে মাছ শিকার। এমনকি বেশি মাছ পেতে নদীতে ছিটানো হয় বিষ। এসবের পেছনে কাজ করে শক্তিশালী একটি চক্র। ঘুষ নিয়ে তারা অভয়ারণ্যে মাছ ধরার সুযোগ করে দেয়। চুক্তির মাধ্যমে জেলেদের কাছে অঘোষিত ইজারা দেয় বনের নিষিদ্ধ ও অভয়ারণ্য নদী-খাল। বন বিভাগের কর্মী ছাড়াও ওই চক্রে রয়েছেন দাদন দেওয়া মাছ ব্যবসায়ী ও স্থানীয় প্রভাবশালী।

তবে বন বিভাগের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে সুন্দরবনের অভয়ারণ্য এলাকায় মাছ ধারার দায়ে এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন জেলেকে আটক করা হয়েছে। আটক জেলেরা হলেন- কয়রা থানার সদর ইউনিয়নের পল্লিমঙ্গল এলাকার বাসিন্দা, রিয়াসাদ গাজি, আয়ুবগাজি, জামাল ফারুক, আবু বক্কর, নূর হোসেন, সাইফুল্লাহ সানা ও বাবু গাজি।

রজব আলী কয়রা উপজেলার ৪ নং কয়রা এলাকার বাসিন্দা। সুন্দরবনে মাছ ধরেই জীবিকা নির্বাহ করেন। চুক্তির মাধ্যমে (ঘুষ দিয়ে) সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে এলাকায় যে-সব জেলে মাছ ধরতে যান, সেলিম তাদের মধ্যে একজন।তিনি বলেন, অভয়ারণ্যে মাছ ধরতে কিছু বাড়তি টাকা খরচ হয়। কিন্তু অল্প সময়ে অনেক মাছ পাওয়া যায়। মাছ ধরেই সেই খরচ তুলতে হয়।তিনি কোম্পানির মাধ্যমে ভোমর খালির টহল ফাড়ির কর্মকর্কা আব্দুল হাকিমকে প্রতি গোন (১০) দিন ১০ হাজার টাকা দিতে অভয়ারণ্যে মাছ ধরার অলিখিত চুক্তি করেন৷

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ আগে বনবিভাগের পাস (অনুমতিপত্র) নিয়ে ১০টি নৌকায় আমরা ১২ জন জেলে বনে প্রবেশ করি। এর আগে বেশি মাছ পাওয়ার আসায় সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে মাছ ধরার জন্য দাদন ব্যবসায়ী আসাদুলের মাধ্যমে ভোমর খালি টহল ফাঁড়ির কর্মকর্তা আব্দুল হাকিমের সাথে ১ লক্ষ টাকায় ১০ দিনের জন্য অলিখিত চুক্তি হয়। যার মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী আমরা বাদায় (সুন্দারবনে) প্রবেশের আগেই নগদ ৮০ হাজার টাকা কয়রায় একটি হোটেলে দাদন ব্যবসী আসাদুলের মধ্যস্থতায় ভোমরখালি টহল ফাড়ির কর্মকর্তা আব্দুল হাকিমের কাছে পরিশোধ করি। ওই দাদন ব্যবসায়ী ওই কর্মকর্তাকে খাসির মাংস দিয়ে আপ্যায়ন করেন।

এসময় সুন্দরবনে মাছ ধরা অবস্থায় তুলনামূলকভাবে বেশি ও বড় মাছ পাওয়ায় চুক্তি ভঙ্গ করে ভোমর খালি টহল ফাড়ির কর্মকর্তা আমাদের সাত জন জেলে আটক করে ও তিনটি নৌকা জব্দ করে। এসময় আমরা বাকি তিনজন পালিয়ে যায়। তবে ওই সময় একই স্থানে বিষ দিয়ে মাছ ধরার অপরাধে একটি নৌকা ও কয়েকজন জেলেকে আটক করা হলেও টাকার বিনিময়ে তাদের ছেড়ে দেয় ওই কর্মকর্তা এবং সে সময় অন্য জেলেরা সেখানে মাছ ধরতে থাকে তাদের কিছু বলেননি আগে থেকে চুক্তি অনুযায়ী ঘুষ নেওয়ার কারণে ।আমাদের জেলে আটক করে রেখে ২ দিন দেন দরবার করেন ওই কর্মকর্তা । মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করেন আমাদের দাদন ব্যবসায়ী আসাদুলের কাছে। দাবি অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় তিনি ২ দিন পর মামলা দেন। তিনি আমাদের নৌকায় পাঁচশ কেজির বেশি মাছ থাকার পরও তিনি জব্দ তালিকায় মাত্র ৫০ কেজি মাছ দেখিয়ে বাকি মাছ আত্মসাৎ করেন।

এব্যাপারে জানতে ভোমর খালির টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ( ওসি) আব্দুল হাকিমের কাছে একাধিক বার তার মোঠোফোনে ফোন দিলেও ফোন ধরেননি। এ বিষয়ে পশ্চিম সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ জেড এম হাসানুজ্জামান বলেন, সাধারণ জেলে হোক বা প্রভাবশালী বনের আইন সবার জন্য সমান। অভয়ারণ্যে প্রবেশ বা বনে অপরাধ করলে কাউকে ছাড় দেওয়া হয় না।তিনি আরও বলেন, কোনো বনকর্মীর বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে মাছ শিকারের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগ থাকলে জেলেরা সরাসরি আমাদের জানাক। তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা নেব।তিনি ওই বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান৷

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana