নিউজ ডেস্ক
৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের চাকরিতে যোগদানের তারিখ পেছানো হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্ত জানায়। এতে প্রার্থীদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে, এবং অনেকেই এই তারিখ পরিবর্তনকে হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছেন।
নতুন প্রজ্ঞাপন অনুসারে, ৪৩তম বিসিএসের নিয়োগপ্রাপ্তদের যোগদানের পূর্বনির্ধারিত ১৭ নভেম্বরের পরিবর্তে ১ জানুয়ারি যোগদানের দিন ধার্য করা হয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর ২ হাজার ৬৪ জনকে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রার্থী জানান, প্রায় ১০ মাস পর প্রজ্ঞাপন হলেও যোগদানের তারিখ পরিবর্তন তাঁদের জন্য হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একজন প্রার্থী বলেন, "আমাদের যোগদানের জন্য অনেক পরিকল্পনা ছিল, কিন্তু দেড় মাস পিছিয়ে দেওয়ায় দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে। আবার যদি কোনো জটিলতা তৈরি হয়, সেটি আমাদের জন্য বড় আঘাত হবে।"
আরেক প্রার্থী বলেন, "পিএসসির সুপারিশ আসার পর গেজেটে ৯৯ জন প্রার্থী বাদ পড়েছেন। এ ঘটনা খুবই হতাশাজনক। এখন যদি আবারও কোনো পরিবর্তন হয়, সেটা হবে চরম অন্যায়।" তিনি আরও যোগ করেন, "গেজেটে নাম বাদ দেওয়ার সংস্কৃতি আগের সরকারের সময় ছিল, কিন্তু আমরা এই সরকারের কাছ থেকে একটি বৈষম্যহীন সমাজ আশা করি। চার বছর ধরে এত পরীক্ষা দেওয়ার পর বাদ পড়া একেবারেই অবিচার। আশা করি, বর্তমান সরকার এ ধরনের বৈষম্য দূর করবে।"
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দুজন কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা বলেন, "সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেকোনো সময় যোগদানের তারিখ পরিবর্তন হতে পারে। এটি নিয়ে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, কারণ পরিবর্তনটি ইতিবাচকও হতে পারে।"
উল্লেখ্য, সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) ২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৪৩তম বিসিএসের মাধ্যমে ২,১৬৩ জন প্রার্থীকে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করে। প্রজ্ঞাপনে ৯৯ জন বাদ পড়েন এবং চূড়ান্ত তালিকায় ২ হাজার ৬৪ জন প্রার্থী বিভিন্ন ক্যাডারে নিয়োগ পান। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ২৯৩ জন, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫ জন এবং পুলিশ ক্যাডারে ৯৬ জন অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল।
এই পরিবর্তন নিয়ে প্রার্থীদের উদ্বেগ সত্ত্বেও সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, প্রক্রিয়াটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে এবং কোনো প্রার্থী অন্যায়ভাবে বাদ পড়বেন না।
সূত্র: প্রথম আলো