কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
খুলনার কয়রা উপজেলার চাঁদআলী সেতুর টোল আদায়কেন্দ্রে পড়ে গিয়ে শরিফুল ইসলাম (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। রবিবার বিকেলে ঘটে যাওয়া এ ঘটনায় আহত হওয়ার পর তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে সোমবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত শরিফুল আমাদী ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামের মৃত নেহালউদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শরিফুল রবিবার বিকেলে বামিয়া এলাকা থেকে মেয়ের বাড়ি থেকে খড়বোঝাই নছিমন নিয়ে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে ফিরছিলেন। চাঁদআলী সেতুর টোল পয়েন্টে পৌঁছালে টোল আদায়কারীরা টোল নেওয়ার জন্য বাঁশ টেনে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করে। সেই সময় খড়ের স্তূপের ওপর বসে থাকা শরিফুল হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে নিচে পড়ে মাথায় মারাত্মক আঘাত পান। দ্রুত তাকে কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে রাতেই তার মৃত্যু হয়।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষ পরস্পরবিরোধী দাবি তুলেছে। নিহতের পরিবার এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন স্থানীয়ের অভিযোগ—টোল আদায়কারীরা অতিরিক্ত জোরে বাঁশ টেনে ধরায় নছিমনে ধাক্কা লাগে এবং সেই ধাক্কায় শরিফুল নিচে পড়ে যান। তাদের মতে, টোল আদায়কারীদের অসাবধানতা এবং তড়িঘড়ি করে বাঁশ টানার কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
অন্যদিকে, টোল আদায়কারীরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, শরিফুল নছিমনের ওপরে অতিরিক্ত খড়ের ওপর ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসে ছিলেন এবং তাদের বাঁশের কারণে তিনি পড়ে যাননি। তারা বলেন, তিনি নিজেই ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে গিয়ে আহত হন এবং পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে।
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন টোল আদায় পদ্ধতিতে নিয়ম-শৃঙ্খলার অভাব রয়েছে, অনেক সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অসতর্কভাবে অথবা হঠাৎ বাঁশ টেনে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করেন, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ায়। তারা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করেছেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত ঘোষণা না এলেও স্থানীয়দের দাবি—একজন মানুষের মৃত্যু হওয়ায় বিষয়টি দ্রুত ও সঠিকভাবে খতিয়ে দেখা জরুরি