
ডেস্ক নিউজ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম ব্যক্তিগত শুদ্ধি বা ব্যক্তির সংস্কার ছাড়া রাষ্ট্রের সংস্কার সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন, ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে এবং ব্যক্তির মধ্যে পরিবর্তন আনতে পারলে তবেই সমাজ ও রাষ্ট্রে পরিবর্তন সম্ভব। তাঁর মতে, bangladesher rajniti একটি জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি, যেখানে রাজনৈতিক পরিবর্তন বা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পরিবর্তন করলেও, বাস্তবিক পরিবর্তন সম্ভব হয় না যতক্ষণ না ব্যক্তির শুদ্ধি ঘটানো হয়। একমাত্র ইসলামী শুদ্ধি এবং আত্মশুদ্ধি তবেই bangladesher rajniti ও সমাজের অবস্থা উন্নত হতে পারে।
রোববার সকালে বরিশালের চরমোনাই দরবার শরিফে পবিত্র রমজান উপলক্ষে ১৫ দিনব্যাপী তালিম-তারবিয়াতের কার্যক্রম উদ্বোধনকালে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এসব কথা বলেন। জোহরের নামাজের পর তিনি তার উদ্বোধনী বয়ানে দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং ইসলামের ভিত্তিতে সংস্কারের আহ্বান জানান।
ব্যক্তির শুদ্ধি ছাড়া রাষ্ট্রের শুদ্ধি অসম্ভব
মুফতি রেজাউল করীম তার বক্তৃতায় বলেন, “রাষ্ট্র কিংবা রাজনীতি সব জায়গাতেই সমস্যার সূচনা হয় ব্যক্তির মাধ্যমে। ব্যক্তি যদি কর্তৃত্ববাদী হন, তাহলে রাজনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থাকে দূষিত করেন।” তিনি আরও বলেন, “এ জন্য ব্যক্তির মধ্যে জন্ম নেওয়া মাইক্রো (ক্ষুদ্র) ফ্যাসিবাদই ম্যাক্রো (সামষ্টিক) ফ্যাসিবাদের সূচনা করে এবং রাষ্ট্রকে ফ্যাসিজমের নির্মম দুর্বিপাকে নিপতিত করে।”
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও উল্লেখ করেন, “তাই আমাদের ব্যক্তিগত শুদ্ধি না হলে রাষ্ট্রের শুদ্ধি বা সংস্কার অসম্ভব।” অর্থাৎ, bangladesher rajniti এবং সমাজের সংস্কার ও উন্নতির জন্য আমাদের প্রথমে ব্যক্তিগতভাবে শুদ্ধ হতে হবে। ব্যক্তির দুর্নীতি, কর্তৃত্ববাদিতা এবং আত্মবিশ্বাসহীনতার কারণে রাষ্ট্রব্যবস্থা দূষিত হয় এবং পরিবর্তন সম্ভব হয় না। তাই, সমাজের মূল ভিত্তি হওয়া উচিত ইসলামী মূল্যবোধ এবং ইসলামী শিক্ষা অনুসরণ করা।
দুর্নীতি মোকাবিলায় ব্যক্তির সংস্কার
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, “ব্যক্তি দুর্নীতিগ্রস্ত হলে কোনো আইন-কানুন দিয়ে দুর্নীতি রোধ করা যায় না।” তিনি সাফ বলেন, “আত্মা দূষিত হলে তার প্রভাব সমাজ-রাষ্ট্রে সর্বত্র বিস্তৃত হয়।” এ থেকে বুঝা যায়, আইন-কানুন শুধুমাত্র একটি তাত্ক্ষণিক প্রতিকার, তবে দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন সম্ভব নয় যতক্ষণ না ব্যক্তির মানসিকতা ও আত্মবিশ্বাস পরিবর্তিত হয়। ব্যক্তিগত সংস্কারের মাধ্যমে সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সংস্কারের সূচনা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, “ব্যক্তির সংস্কার ও আত্মশুদ্ধি আগে প্রয়োজন। ব্যক্তির শুদ্ধি ছাড়া রাষ্ট্র শুদ্ধি সম্ভব নয়। কোনো সংস্কারই সুফল বয়ে আনতে পারবে না।” অর্থাৎ, ব্যক্তি পরিবর্তন না হলে, সমগ্র রাষ্ট্র ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা অসম্ভব। এক্ষেত্রে তিনি ইসলামের শিক্ষা এবং ইসলামী মূল্যবোধের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
নতুন ফ্যাসিবাদের অশুভ পদধ্বনি
নতুন ফ্যাসিবাদের আসন্ন শঙ্কা প্রসঙ্গে চরমোনাই পীর বলেন, “গত বছরের ৫ আগস্ট বড় ফ্যাসিবাদের বিদায় হয়েছে। কিন্তু তারপরও দেশের নানা প্রান্তে আগের মতো দখলদারি, হানাহানি এবং পদ নিয়ে কাড়াকাড়ির চিত্র দেখা যাচ্ছে।” তার মতে, এসব সংকট মূলত একটি নতুন ধরনের ফ্যাসিবাদকেই প্রতিফলিত করে।
তিনি মনে করেন, যে পরিবর্তন এসেছে, তা শুধু দলের পরিবর্তন। তবে যদি আত্মশুদ্ধি না হয়, তাহলে শুধু দল পরিবর্তন করে সমাজে প্রকৃত পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। তাই ইসলামি মূল্যবোধ এবং ব্যক্তিগত শুদ্ধতার প্রয়োজনীয়তার ওপর তিনি গুরুত্ব দেন।
নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে ইসলামের অন্তর্ভুক্তির আহ্বান
মুফতি রেজাউল করীম নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রস্তাবের বিষয়ে তার মতামত জানান। তিনি বলেন, “হাজার বছরের ইতিহাসের শিক্ষা হলো—ইসলাম ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা শান্তি আনতে পারেনি।” তার মতে, bangladesher rajniti te যে নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত এর কথা বলা হচ্ছে, তাতে ইসলামকে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামী শিক্ষা ও ইসলামী সমাজই সমাজের মধ্যে শান্তি, ন্যায় এবং সুবিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
সমাজবিধ্বংসী এজেন্ডা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান
চরমোনাই পীর তার বক্তব্যে সতর্কতা প্রকাশ করেন যে, নতুন রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে সমাজবিধ্বংসী এলজিবিটিকিউ কর্মীদের অন্তর্ভুক্তি দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ ধর্মীয়ভাবে অতি আবেগপ্রবণ। ধর্ম তাঁদের কাছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে। এখানে ধর্মবিদ্বেষী কোনো ব্যক্তি রাজনৈতিক দলের নেতা হলে সেই দলকে জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।”
তিনি নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিকে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন। বাংলাদেশে সমকামীদের প্রমোট করার কোনো সুযোগ নেই, কারণ bangladesher rajniti অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ জনগণের দ্বারা পরিচালিত এবং ধর্মীয় অনুশাসন তাদের কাছে সর্বোচ্চ।
রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্য ব্যক্তি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা
মুফতি রেজাউল করীম বলেন, “সংস্কার ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি ব্যক্তির সংস্কারও অত্যন্ত জরুরি।” তার মতে, ব্যক্তি পরিবর্তন না হলে কোনো সংস্কারই সফল হবে না। তার প্রত্যাশা, একটি আদর্শ ইসলামী সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হোক, যেখানে ন্যায়বিচার, সততা ও ইসলামী মূল্যবোধ অটুট থাকবে।
তার বক্তৃতায় তিনি ইসলামি সমাজ ব্যবস্থার গুরুত্ব ও সংস্কারের জন্য ইসলামী মূল্যবোধের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে শক্তিশালী বার্তা দিয়েছেন।
উপসংহার
চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম এর এই বক্তব্যে তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, রাষ্ট্র ও সমাজের সংস্কার করতে হলে, প্রথমে ব্যক্তির সংস্কার এর দিকে নজর দিতে হবে। bangladesher rajniti ও সমাজে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে ইসলামের শুদ্ধ শিক্ষা ও ইসলামী মূল্যবোধ অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। ব্যক্তি শুদ্ধি ছাড়া রাষ্ট্র শুদ্ধি কল্পনাতীত। রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য প্রয়োজন ব্যক্তির সংস্কার, যা কেবল ইসলামী আদর্শ এর মাধ্যমে সম্ভব। Visit us for more news.