ব্যালন ডি’অর পুরস্কারের অনুষ্ঠান শুরু হতে তখন আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। রিয়াল মাদ্রিদের একটি ৫০ সদস্যের দল প্যারিসের থিয়েটার দু শাতলেতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। ক্লাবের নিজস্ব টেলিভিশন চ্যানেলেও সরাসরি সম্প্রচারের সব আয়োজন সম্পন্ন ছিল। পুরো রিয়াল শিবিরের ধারণা ছিল যে এবারের ব্যালন ডি’অর জিতবেন তাদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
কিন্তু হঠাৎ করেই সবকিছু বদলে যায়। রিয়াল জানতে পারে, ব্যালন ডি’অর পুরস্কার পাচ্ছেন না ভিনিসিয়ুস, বরং সেটি উঠছে ম্যানচেস্টার সিটির স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রদ্রির হাতে। খবরটি পাওয়ার পর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে যেন শোকের ছায়া নেমে আসে। হতাশা থেকে রিয়াল মাদ্রিদ অনুষ্ঠান বয়কটের সিদ্ধান্ত নেয় এবং সব সম্প্রচার পরিকল্পনা বাতিল করে। রদ্রি পুরস্কার পাওয়ার পর, রিয়ালের সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়রা ভিনিসিয়ুসকে সমর্থন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা পোস্ট করতে শুরু করেন।
এবার ভিনিসিয়ুসের প্রতি সমর্থন জানাতে এগিয়ে এসেছে ব্রাজিল সরকারও। দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক বার্তায় জানিয়েছে, “তুমি অসাধারণ একজন খেলোয়াড় এবং ইতোমধ্যেই ফুটবলে ইতিহাস গড়েছ। তবে তা শুধু তোমার খেলার নৈপুণ্যের জন্য নয়, বরং বর্ণবাদের বিরুদ্ধে তোমার সাহসী লড়াইয়ের জন্যও।”
ভিনিসিয়ুসের ফুটবল যাত্রা শুরু হয়েছিল ব্রাজিলের ক্লাব ফ্ল্যামেঙ্গো থেকে। ২০১৮ সালে তিনি যোগ দেন রিয়াল মাদ্রিদে। তাঁর প্রথম ক্লাব ফ্ল্যামেঙ্গোও এক বার্তায় লিখেছে, “তোমার সাফল্যের জন্য আমাদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। যদিও এই পুরস্কার ভোটের মাধ্যমে তোমার হাতে না উঠেছে, আমরা জানি যে তুমি সমর্থকদের হৃদয়ে ইতোমধ্যেই সেরা হিসেবে জায়গা করে নিয়েছ।”
এই বিতর্ক ফুটবল জগতে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভিনিসিয়ুসের প্রতি এমন সমর্থন কেবল তাঁর নৈপুণ্যকেই নয়, বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধাকেও নতুন উচ্চতায় তুলে ধরেছে।
সূত্র: প্রথম আলো