খ,ম,জায়েদ হোসেন,নাসিরনগর
(ব্রাহ্মণবাড়ীয়া) থেকেঃ
বাংলাদেশের রাজনৈতক অঙ্গণে কিংবদন্তি রাজনীতিবীদ ভাষা সৈনিক অলি আহাদের ১৯৭৩ সালের নির্বাচনের পটভূমি ছিল ভাষা আন্দোলনের চেতনার প্রতিফলন ও মুক্তিযুদ্ধের পর দেশের প্রথম সাধারণ নির্বাচন, যেখানে তিনি একদিকে ভাষা আন্দোলনের ধারক-বাহক হিসেবে রাজনৈতিক পরিচিতি লাভ করেন, অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ-কেন্দ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্বতন্ত্র বা বিরোধী অবস্থান থেকে অংশগ্রহণ করেন, যা ছিল তাঁর আপসহীন নীতিরই অংশ, যদিও সেই নির্বাচনে তাঁর দল বা জোট তেমন সাফল্য পায়নি, কারণ ১৯৭৩-এর নির্বাচন ছিল মূলত আওয়ামী লীগের একক আধিপত্যের।
অলি আহাদ ছিলেন ভাষা আন্দোলনের একজন প্রধান নেতা, যিনি ১৯৪৮ সাল থেকেই ভাষা সৈনিক হিসেবে পরিচিতি পান এবং ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭৩ সালের নির্বাচন ছিল মুক্তিযুদ্ধের পর প্রথম নির্বাচন এবং ভাষা আন্দোলনের চেতনার ভিত্তিতে একটি নতুন রাষ্ট্র গঠনের প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত।
তিনি ছিলেন একজন আপসহীন নেতা এবং ভাষা আন্দোলনের চেতনাকে ধারণকারী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি 'পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগ'-এর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
১৯৭৩ সালের এটি ছিল বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় নির্বাচন, যা ১৯৭২ সালের সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয়। এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (মোজাফফর), ন্যাপ (ভাসানী), সিপিবি, জাসদসহ ১৪টি দল অংশ নেয়।
এই নির্বাচনে তিনি ভাষা আন্দোলনের একজন অনুসারী ও নেতা হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। যদিও তিনি স্বতন্ত্রভাবে বা বিরোধী জোটের অংশ হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, তবে সেই সময়ের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তাঁর মূল লক্ষ্য ছিল ভাষা আন্দোলনের আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখা, যা পরবর্তীকালে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল।
১৯৭৩ সালের নির্বাচন ছিল ভাষা আন্দোলনের ফসল এবং একটি নতুন জাতির আত্মপ্রকাশের সময়। অলি আহাদ সেই প্রেক্ষাপটে একজন ভাষা সৈনিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন, যা ছিল তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক ও আদর্শিক সংগ্রামেরই একটি অংশ। তারই ধারাবাহিকতায় তাঁর একমাত্র সন্তান আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণ বাড়ীয়া -২ (সরাইল - আশুগঞ্জ) আসনে বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। সতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগণের চাওয়া পাওয়া, আশা- আকাঙ্খা দুঃখ -বেদনার সাথী হয়ে কাজ করতে চান এ আসনে।
১৯৭৩ সালে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বাবা ভাষা সৈনিক অলি আহাদ তৎকালীন কুমিল্লা মহকুমা থাকা ব্রাহ্মণবাড়ীয়া ২
( সরাইল- আশুগঞ্জ - নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে( গাভী মার্কায়) নির্বাচন করেছিলেন। এ নির্বাচনে সারা দেশে ব্যাপক অনিয়ম ভোট কারচুপির ঘটনা ঘটেছিল। অলি আহাদ গাভী মার্কায় ৪০ হাজার ভোট পেয়েছিল, প্রয়াত তাহের উদ্দিন ঠাকুর ভোট পেয়েছিল ২৮ হাজার।
তৎকালীন সরকার দলীয় মনোনীত প্রার্থীকে জিতানোর জন্য হেলিকপ্টার করে ব্যালট পেপার নিয়ে এনে স্বতন্ত্র প্রার্থী অলি আহাদকে পরাজয় দেখিয়েছিল।
এবার ঠিক এ আসনে অলি আহাদের একমাত্র সন্তান ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে লড়বেন।