নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের গত দেড় দশকের শাসনামলে জনপ্রশাসনে অনুমোদিত সংখ্যার চেয়ে প্রায় দেড় গুণ বেশি কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিব করা হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিব পদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা দুই গুণ ছাড়িয়ে গেছে।
এর ফলে একদিকে অতিরিক্ত কর্মকর্তাদের বেতন ও ভাড়ার খরচে প্রশাসনিক ব্যয় ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে পদোন্নতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পাওয়ায় প্রশাসনের মধ্যে অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে পদোন্নতি দেওয়ায় চাকরিজীবীদের মধ্যে বিভক্তি এবং হতাশা তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যারা রাজনৈতিকভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত ছিলেন না, তাদের মধ্যে ক্ষোভ বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই প্রশাসনে এই অসন্তোষ ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসছে। অনেক কর্মকর্তা তাদের পদোন্নতি ও পদায়নের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন, এমনকি সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটছে।
নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার আমলে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা অনেক কর্মকর্তাকে সরিয়ে নতুন মুখ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এতে প্রশাসনের মাথাভারী অবস্থা আরও গুরুতর আকার ধারণ করছে, এবং অনেকেই আশঙ্কা করছেন যে, আগামীতে এই সমস্যা আরও জটিল হতে পারে।
এদিকে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সুবিধা পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকে নতুন সরকারকে সহযোগিতা করতে আগ্রহী নন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর ফলে প্রশাসনে অস্থিরতা এবং সরকারি কার্যক্রমে ধীরগতি দেখা দিয়েছে, যা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়েছে।
ক্ষমতার পালাবদলের দেড় মাস পরেও প্রশাসনিক কাজে সুষ্ঠু গতি ফিরে না আসায় সরকারকে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সূত্র: বিবিসি নিউজ