এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ,পাইকগাছা (খুলনা)
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ২৩নং পাইকগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। লেখাপড়া থেকে শুরু করে খেলাধুলা এবং জাতীয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রশংসিত ও সম্মানিত হয়েছেন। ইতোমধ্যে জাতীয় শিক্ষা পদক ২০২৪ এর জন্য শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অত্র বিদ্যালয় এবং শ্রেষ্ঠ কাপ শিক্ষক হিসেবে সহকারী শিক্ষক রত্নেশর সরকার নির্বাচিত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৪৬ সালে উপজেলা সদরের প্রাণ কেন্দ্রে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশেই প্রতিষ্ঠিত হয় ২৩নং পাইকগাছা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক সহ ১২ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছে। শিক্ষার্থী রয়েছে, ৫৪৫ জন। যার মধ্যে প্রাক প্রাথমিকে ৫৪, ১ম শ্রেণিতে ৭৫, ২য় শ্রেণিতে ১০০, ৩য় শ্রেণিতে ১০১, ৪র্থ শ্রেণিতে ১০১ ও ৫ম শ্রেণিতে ১০৯ জন শিক্ষার্থী। লেখাপড়ার জন্য বিদ্যালয়ের দ্বিতল বিশিষ্ট দুটি ভবন রয়েছে। অভিভাবকদের জন্য রয়েছে অভিভাবক ছাউনি।
ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার জন্য রয়েছে বিভিন্ন ধরণের খেলা সরঞ্জাম। রয়েছে শিক্ষক ও ছেলে-মেয়েদের জন্য আলাদা আলাদা উন্নত স্যানিটেশন ব্যবস্থা। উন্নত পরিবেশ ও ভালো লেখাপড়ার জন্য বিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকায়। ফলে প্রতিবছর বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা সহ সকল ক্ষেত্রে কৃতিত্ব অর্জন করছে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী সর্বশেষ ২০২২ সালে ২৫ জন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর মধ্যে ২১ জন বৃত্তি লাভ করে। যার মধ্যে ট্যালেন্টপুলে ৬ এবং সাধারণ গ্রেডে ১৫ জন শিক্ষার্থী। প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্মরূপ বিদ্যালয়টি জাতীয় শিক্ষা পদক ২০২৪ এর জন্য শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
পাশাপাশি একই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক রত্নেশর সরকার শ্রেষ্ঠ কাপ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন। বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান বৃদ্ধি করার জন্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করা জরুরী বলে মনে করেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। অভিভাবক তমা বিশ্বাস বলেন, স্কুলের লেখাপড়ার মান যথেষ্ঠ ভালো। প্রধান শিক্ষক অত্যান্ত আন্তরিকতার সহিত দায়িত্ব পালন করে থাকেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মানসিক বিকাশে সহকারী শিক্ষকদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রতি অনেকবেশি আন্তরিক হতে হবে। প্রধান শিক্ষক বলেন, শিক্ষক অভিভাবক, প্রশাসন ও প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর সহ সকলের সহযোগিতায় বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার মান অনেক বেড়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জাতীয় দিবসের কুচকাওয়াজ, খেলাধুলা এবং প্রতিযোগিতায় কৃতিত্ব অর্জন করছে। এবার সেরা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হওয়ায় আমরা সবাই গর্ববোধ করছি। পাশাপাশি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। বিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে প্রধান শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। এটি পরিত্যাক্ত করে নতুন ভবন নির্মাণ করতে হবে। এছাড়া শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধি করা সহ প্রধান শিক্ষকের জন্য আলাদা অফিস কক্ষের প্রয়োজন বলে মনে করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অভিভাবকরা। উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিদ্যুৎ রঞ্জন সাহা বলেন, মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। পাশের হার শতভাগ, উপস্থিতি সন্তোষ জনক, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও অনেক বেশি। সবমিলিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নত পরিবেশ ও লেখাপড়ার মান ভালো হওয়ায় বিদ্যালয়টি এ বছর জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ এর জন্য নির্বাচিত হয়েছে। এ ধারা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে এমন প্রত্যাশা করেছেন অভিভাবক ও প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর।