
এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ,পাইকগাছা,খুলনা
আজ শনিবার ( ৬ এপ্রিল) থেকে মহা ধুমধামের মধ্যে দিয়ে শুরু হচ্ছে ৪শ বছরের ঐতিহ্যবাহী পাইকগাছার কপিলমুনির মহা বারুনী স্নান। আজ ৬ এপ্রিল মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী শনিবার ৭টা ৫৩ মিনিটে শতভিষা নক্ষত্র যোগে কালীবাড়ী ঘাটে স্নান শুরু হয়ে শেষ হবে দুপুর ১টা ৫০মিনিটে।
পাইকগাছা কয়রার সংসদ সদস্য মোঃ রশীদুজ্জামানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ৪শত বছরের ঐতিহ্যবাহী মহা বারুনী মেলা ফিরছে জাঁকজমকপূর্ণভাবে। এ মেলাকে ঘিরে রয়েছে নানা ইতিহাস ও নানা কাহিনী।
ঐতিহ্যবাহী এ বারুনী মেলা কপিলমুনির সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধতায় ভরে দিয়েছে। এ মেলার প্রতি শুধু বর্ধিষ্ণু জনপদ কপিলমুনি নয় আশপাশের বিভিন্ন জেলার সংস্কৃতিমনা মানুষের রয়েছে এক দুর্নিবার আকর্ষণ। পক্ষকালব্যাপী এ মেলাকে ঘিরে সার্কাস, যাদু, পুতুলনাচসহ বসে যাত্রাপালার আসর। আর মনোহরী দোকানের পাশাপশি বাহারী মিষ্টান্ন দ্রব্য ও মোয়া-মুড়কির পসরা বসে। বসে কাঠ, বাঁশ ও বেঁতের নানা গৃহস্থলী সামগ্রীর দোকান ও বইয়ের স্টল। অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে আয়োজিত হওয়ায় মেলাটি মুগ্ধতায় ভরে ওঠে।
নানা জটিলতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও দুর্বিপাকের কারণে সর্বশেষ ২০১৪ সালের পর অর্থাৎ প্রায় ১০বছর যাবৎ কপিলমুনিতে মেলা বসেনি। তাই হারিয়ে যাওয়া এ মেলাকে প্রায় ভুলতে বসেছিল কপিলমুনিবাসী।
জানা যায়, কোন এক চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে শতভিষা নক্ষত্রযোগে মহামুনি কপিলদেব কপিলমুনির কপোতাক্ষ ঘাটে সাধনায় মা গঙ্গার সাক্ষাৎ পেয়ে সিদ্ধি লাভ করেন। এ কারণে তাঁর সিদ্ধিলাভের দিনটিকে স্মরণ রাখতে ও নিজেকে পাপমুক্ত করতে ধর্ম প্রাণ সনাতন ভক্তরা কপোতাক্ষ নদের কপিলমুনি নামক স্থানের কালীবাড়ী ঘাটে ১হাজার বছর ধরে গঙ্গা স্নান বা বারুণী স্নান করে পুত-
পবিত্র হয়ে উৎসব পালন করে আসছেন। তবে এ উপলক্ষ্যে মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৪শত বছর ধরে। আগামী ৬এপ্রিল শনিবার ৭টা ৫৩ মিনিটে শতভিষা নক্ষত্র যোগে কালীবাড়ী ঘাটে স্নান শুরু হবে। আর ওইদিন দুপুর ১টা ৫০মিনিটে স্নান শেষ হবে। তবে বিশেষ কারণে ১১এপ্রিল থেকে মেলা বসবে বলে জানা গেছে।
প্রবাদ আছে, মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে গঙ্গার পবিত্র জল এই স্থানে প্রবাহিত হয়। বরুণ জলের দেবতা, বরুণের স্ত্রী বারুণী, বারুণীর আর এক নাম গঙ্গা। তাই বারুণী স্নান মানেই গঙ্গা স্নান। অতীত ঐতিহ্য সমুন্নত রাখতে তাই আয়োজক কমিটি এবারও মহা বারুণীর পূণ্যস্নানের অয়োজন করেছেন।
মেলা কমিটির পরিচালক ও কপিলমুনি বণিক সমিতির সদস্য সচিব এম মাহমুদ আসলাম বলেন, সেই স্মরণাতীত কাল থেকে কপিলমুনিতে বারুণী হয়ে থাকে। সকল শ্রেণীর মানুষ মেলা উপভোগ করে থাকেন। কিন্তু ১০ বছর যাবৎ মেলা না হওয়ায় এ জনপদের মানুষ বিনোদন থেকে বঞ্চিত হয়।
তবে এ বছর এমপি মোঃ রশীদুজ্জামানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বারুনী মেলা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে মেলা অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ ও সুধীমহলের সহযোগীতা কামনা করছি।
মেলা কমিটির সভাপতি ও কালী মন্দিরের সভাপতি শ্রী চম্পক কুমার পাল বলেন, বারুনী মেলা আমাদের ঐতিহ্য, মেলা অনুষ্ঠানের জন্য এমপি মো. রশীদুজ্জামানের সহযোগীতা করছেন। বারুনী মেলা সকল শ্রেণির মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হোক এটা আমার প্রত্যাশা।