বিশেষ প্রতিনিধি ;
খুলনা মহানগরীতে ভয়ভীতি দেখিয়ে এক গৃহবধু দুই সন্তানের জননী (২৪) কে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঘটনায় জড়িত দুইজনের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় ওই ভূক্তভোগি নারী বাদি হয়ে মামলা করেছেন। মামলার দেড় মাসের বেশি অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত ওই দুই আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি থানা পুলিশ।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ওই গৃহবধু দুই সন্তান নিয়ে নগরীর নিরালা আবাসিত এলাকায় ভাড়া বাড়িতে বাস করেন। একই নিরালা এলাকার মোঃ জামাল উদ্দিন মোল্লা (৪০) ওই গৃহবধুর আপন ভগ্নিপতি। বর্তমানে তিনি ২০১৭ সাল থেকে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হিসাবে কর্মরত আছেন। তবে তাদের উভয়ের গ্রামের বাড়ি বাগেরহাট জেলার মোল্লারহাট উপজেলায়। মামলার অপর আসামী হলেন একই নিরালা এলাকার মোঃ রবিউল ইসলাম (৩৯)।
তিনিও বর্তমানে বাগেরহাট জেলা কৃষি অধিদপ্তরে কর্মরত আছেন। ভূক্তভোগি ওই নারীর স্বামী চাকুরির কারণে বাহিরে থাকার সুযোগ নিয়ে উক্ত জামাল উদ্দিন মোল্লা ও তার সহযোগি রবিউল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ উক্ত গৃহবধূকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। গৃহবধু তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও তার সন্তানদ্বয়কে হত্যার হুমকিও দেয়।
এক পর্যায়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা পুনরায় গৃহবধুর বাসায় এসে দরজায় নক করে। এরপর জামাল উদ্দিন মোল্লা ঘরের ভিতর প্রবেশ করে পূর্বের ধারণকৃত নগ্ন ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধুকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এসময়ে রবিউল ইসলাম ডাইনিং রুমে রসে টিভি দেখছিল বলে মামলায় উল্লেখ করেছেন।
পরবর্তীতে ওই নারী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি বিভাগে ভর্তি হয়ে পরীক্ষা শেষে বাসায় ফেরেন। কিছুটা সুস্থ হয়ে তিনি গত ২৮ সেপ্টেম্বর খুলনা কেএমপির সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১)/৩০ ধারায় ওই দুইজনের বিরুদ্ধে ৪১/২৩ নম্বর মামলা দায়ের করেন। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে একই ধরনের পৃথক ঘটনায় খুলনার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ ২২৩/২৩ নম্বর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও জামাল উদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে খুলনার বটিয়াঘাটা আদালতে সিআর ২৭৯/২৩ নম্বর মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে।
বর্তমানে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য আসামীরা ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে বলে ভূক্তভোগি নারী দাবি করেছেন। এবিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা খুলনা কেএমপির সদর থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোঃ জুয়েলে রানা জানান, মামলা হওয়ার পর আসামীরা পলাতক রয়েছে। তবে বাদির স্বামীকে নিয়ে কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছি এবং গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।
এব্যাপারে গোপালগঞ্জ জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আঃ কাদের সরদার বলেন আমি বিষয়টি গত দুইদিন আগে জেনেছি। আমাদের অফিসিয়াল ভাবে যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সেটা আমরা করব।