ডেস্ক রিপোর্ট :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারে সেটাই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে জনগণ ভালো পরিবেশে ভোট দিয়েছে, আগামীতে ভালোভাবে ভোট দিতে পারবে। জনগণ যাকে ভোট দেবে তারাই ক্ষমতায় আসবে, এটাই বিশ্বাস করি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর সম্পর্কে অবহিত করতে আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, এই দলটি ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতি করে কিছু টাকা যাবে গুলশানে, কিছু যাবে হাওয়া ভবনে, বাকিটা যাবে লন্ডনে। নিজেরা নিজেরা মারামারি করবে, দুর্নীতি করতে করতে এক সময় তারা বলবে আমরা পারবো না। সেই দলকে জনগণ ভোট দেবে?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতো উন্নয়নের পর জনগণকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কী চায়। মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি, কোনো খাদ্য ঘাটতি নেই। যা কিছু করেছি, সব তো জনগণের কাজে লাগছে। সবই তো জনগণ ভোগ করছে। মেট্রোরেল করতে গিয়ে আমাদের নানা কথা শুনতে হয়েছে। সব জায়গায় কথা শুনতে হচ্ছে। আর উন্নয়ন করে সবার প্রশংসা পাব, এটা আশা করিও না। আশা করাও ঠিক হবে না। যাদের এক সময় জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছিল তারা তো এখন সমালোচনা করবেই।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, জনগণের জন্য কাজ করছি, জনগণের জন্য আছি, ১৪ বছরের মধ্যে দেশকে কোথায় নিয়ে এসেছি, সেটাও দেখতে হবে। টানা ক্ষমতায় থাকার কারণে দেশের দ্রুত একটি পরিবর্তন আনা সহজ হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ সুদূরপ্রসারী প্ল্যান করে রাখে। যখনই ক্ষমতায় আসি সেগুলো নিয়ে কাজ করি। ডিজিটাল রূপকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। দেশে গরীব মানুষ একটাও থাকবে না। সিনিয়র সাংবাদিক মনজুরুল আহসান বুলবুল সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধানের কাছে জানতে চান- কী হবে এবং কী হবে?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, হচ্ছে কী হবে কী সেটার উত্তর জনগণের দিতে হবে। শুধু মেগা প্রজেক্ট নয়, রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট কার কাজে লাগে। জনগণই তো ভোগ করে। আজ মেট্রোরেল করলাম, এটা নিয়ে কত কথা শুনতে হলো। এলিভেটেড, কর্ণফুলী টানেল, সবই তো জনগণের জন্য। শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা আশা করেন কীভাবে সবাই খালি প্রশংসা করবে। একটা শ্রেণি আছে, আপনি যাই ভালো করেন সেটাই খারাপ দেখবে। তারা থাকবেই, না হলে তো আপনারা (সাংবাদিকরা) লেখার কিছু পাবেন না।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, কে কী বলল সেটা নিয়ে আমি কমই চিন্তা করি। বাবা-মা, ভাইবোন সবাইকে হারিয়েছি। যতক্ষণ আছি দেশের জন্য কাজ করে যাবো- এটাই আমার কথা।
বিবৃতি না দিয়ে এক্সপার্ট পাঠান, বিশ্বনেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বনেতাদের প্রতি বলেছেন, ড. ইউনূসের ব্যাপারে বিবৃতি না দিয়ে এক্সপার্ট পাঠান। আমাদের এখানে ল এন্ড অর্ডার আছে। আমাদের দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। তবে কেউ যদি শ্রমিকের টাকা না দেয়, আর মামলা হয় আমাদের কি করার আছে। জুডিশিয়ারি তো স্বাধীন। এই মামলা যাতে না হয় তার জন্য ঘুষ দেয়া হয়।
ড. ইউনূসের বিচার প্রসঙ্গে করা সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে প্রথানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমবারে গিয়ে ব্রিকসে সদস্য পদ পাবো এমন চিন্তা ছিলো না। ধাপে ধাপে অন্য দেশগুলোকে সদস্য করা হবে। ব্রিকস যখন প্রতিষ্ঠিত হয় তখন থেকেই পাঁচটি দেশের সরকার প্রধানের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিলো। ভৌগলিকভাবেই আরও নতুন সদস্য করা হবে। আমার সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ছিলো ভিক্ষা চাওয়ার দেশ। এখন আর এই দেশ ভিক্ষা চাওয়ার দেশ নয়। তিনি বলেন, এখন আর গ্রাম নেই। গ্রামেই সব সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। অনলাইনে এখন ব্যবসা করছে।
এসময় তিনি আরও বলেন, ব্রিকস সম্মেলনে নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলি। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ে তুলে ধরা হয়। নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলো কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা ব্রিকস সম্মেলনে বাংলাদেশ তুলে ধরেছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, দক্ষিণের দেশসমূহের উপর আরোপিত সিদ্ধান্ত, বিভাজনের নীতিকে না বলার এখনই সময়। সর্বজনীন নিয়ম ও মূল্যবোধকে অস্ত্রে পরিণত করার প্রচেষ্টাকে অবশ্যই প্রত্যাখ্যান করতে হবে। আমাদের নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার চক্র বন্ধ করতে হবে। বিপদজনক অস্ত্র প্রতিযোগিতায় সম্পদ অপচয় না করে বিশ্বব্যাপী জনসাধারণের জন্য পণ্য ও পরিষেবা প্রদানের জন্য আহ্বান সম্মেলনে জানানো হয়েছে বলে জানান শেখ হাসিনা।