সর্বশেষ:

সংবাদ সম্মেলনে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা : মাছ না পেয়ে ছিপে কামড়!

Facebook
Twitter
LinkedIn

এইচ এম সাগর (হিরামন) খুলনা :

সম্প্রতি খুলনা প্রেসক্লাবে বটিয়াঘাটা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শোয়েব শাত-ঈল-ইভানের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শোয়েব শাত-ঈল-ইভান বলেন,আমার বিরুদ্ধে উত্থাপিত সকল অভিযোগ সঠিক নয়। উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমার মান-সম্মান ক্ষুণ্ন করার জন্যই এই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ধরনের অপপ্রচার প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। উক্ত সংবাদ সম্মেলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি সংবাদ সম্মেলন নিয়ে উপজেলাবাসীর উদ্দেশ্য কিছু কথা বলেন, বটিয়াঘাটা ইউনিয়নের কিসমত ফুলতলা মৌজার SA ১৯ খতিয়ানের ১৫২ ও ১৫৩ দাগে মোট জমি ৭ একর ৪৭ শতাংশ। SA রেকর্ডিয় মালিক ৪ জন: (১) ফুলচাঁদ এর মালিকানা ১২৪.৫০ শতাংশ জমিতে (২) লক্ষণ এর মালিকানা ১২৪.৫০ শতাংশ জমিতে (৩) সুরেন্দ্র এর মালিকানা ১২৪.৫০ শতাংশ জমিতে (৪) রসিকলাল এর এর মালিকানা ৩৭৩.৫০ শতাংশ জমিতে। SA মূলে এই জমি অর্থাৎ ১৯ খতিয়ানের ১৫২ ও ১৫৩ দাগ থেকে ভূমি অধিগ্রহণ মামলা ১৯৮/৬৯-৭০ এর মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১০৮ শতাংশ ও ভূমি অধিগ্রহণ মামলা ৩২/৭১-৭২ এর মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৬৫ শতাংশ ভূমি লাভ করে। অর্থাৎ তর্কিত ভূমিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমি ১৭৩ শতাংশ। বটিয়াঘাটা উপজেলার অর্পিত সম্পত্তি (VP) সংক্রান্ত প্রকাশিত গেজেটে, কিসমত ফুলতলা মৌজার SA ১৯ খতিয়ানের রসিকলাল এর মালিকানাধীন ৩৭৩.৫০ শতাংশ ভূমি ‘ক’ তালিকার আওতায় অর্পিত সম্পত্তি (VP) রুপে গেজেটভুক্ত করা হয়। তর্কিত ভূমিতে মালিকানা তৈরী হয় তিন ধরণের: ১) অর্পিত সম্পত্তি মূলে সরকারের মালিকানা। ২) অধিগ্রহণ মূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানা। ৩) ক্রয় বা উত্তরাধিকার মূলে ব্যক্তি মালিকানা।
সমস্যার সৃষ্টি হয়, যখন RS রেকর্ড প্রকাশিত হয়। RS রেকর্ডে অর্পিত সম্পত্তি আকারে সরকারি মালিকানাধীন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন মোট ৫১৪.৪৫ শতাংশ (৩৪১.৪৫ শতাংশ + ১৭৩ শতাংশ= ৫১৪.৪৫ শতাংশ) ভূমির রেকর্ড প্রকাশিত হয় না।

RS রেকর্ডে তর্কিত সম্পূর্ণ সম্পত্তি ১২ টি দাগে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন খতিয়ানে চলে যায়। মালিক হন SA রেকর্ডিয় মালিক ফুলচাঁদ, সুরেন্দ্র, লক্ষণ এর পরবর্তী প্রজন্মের সদস্যগণ এবং SA রেকর্ডিয় মালিকদের থেকে ক্রয়সূত্রে মালিক হয়েছিলেন এমন ব্যক্তির পরবর্তী প্রজন্মের সদস্যগণ। এই সমস্যা সমাধনে আমরা কি কি পদক্ষেপ নিয়েছি? ১) RS রেকর্ড সংশোধন এর জন্য মামলা করা হয়েছে। ২) SA রেকর্ড মূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন ভূমি চিহ্নিত করে আলাদাকরণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আজও এই ভূমির উপর পূর্ব নির্ধারিত ২য় বারের মতো পরিমাপ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

৩) পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমির মালিকানা চিহ্নিত করার পর SA রেকর্ড মূলে অর্পিত সম্পত্তি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি এর মালিকানা নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবার পর পরিমাপ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। আলাদা করা হবে অর্পিত ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি। কাজ তো ঠিকভাবেই করছেন, তাহলে এই সংবাদ সম্মেলন কেন? ১) যারা এই সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা আমার অফিস কক্ষে এসেছেন মোট ২-৩ বার (সিসি ফুটেজে এর থেকে বেশীবার তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় নাই)। তাদের আমি বুঝিয়ে বলেছি, তারা অনুরোধ করে গেছেন, তারা যেন জমির দখল পান, আমি কথা দিয়েছিলাম, আমি চেয়ারে থাকলে জমির দখল পাবেন। তাহলে আসছে কারা? কেন তারা বলছেন বারবার ঘুরেও সমাধান হচ্ছে না? কেনই বা তারা আমাকে JMI কোম্পানির স্বার্থ রক্ষাকারী বলছেন? এই প্রশ্নের উত্তর তারাই দিতে পারবেন। তাদের প্রশ্ন করুন। ২) এই সম্পত্তির দখল উদ্ধার এর দায়িত্বে মালিকপক্ষের সম্মতিতে জনৈক রবিউল ইসলাম ও তার সন্তান রাকিন বিশ্বাস এর নেতৃত্বে একটি পক্ষ নিয়োজিত আছেন, যারা SA ও RS রেকর্ডিয় মালিক ফুলচাঁদ ও তার উত্তরাধিকার এর অংশের মালিকানাধীন ভূমি বায়নাসূত্রে দলিল সম্পাদন করেছেন। যারা মোটামুটি ভুলেই গেছেন বায়না দলিলের মেয়াদ সাধারণত ০১ বছর। তারাই অফিসে আসেন, মোটামুটি প্রতিদিনই আসেন। তাদের দাবি এখনো কেন হচ্ছেনা? যেদিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমি মাপবেন সেদিনই আমাদের জমি আলাদা করে কেন দেবেন না? ইত্যাদি ইত্যাদি। (সিসি ফুটেজ বিদ্যমান) ৩) তাদের বারংবার বলা হয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমি আলাদা করার পর, অবশিষ্ট সরকারী সম্পত্তি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি নিয়ে আমরা সরকার পক্ষ ও আপনারা ব্যক্তি মালিকানায় যারা আছেন, তারা বসবো, মালিকানার ভিত্তি নিয়ে আলোচনা হবে, আলোচনা শেষে পরিমাপ এর দিন নির্ধারিত হবে, পরিমাপ করে আমি আমার অর্পিত সম্পত্তি আলাদা করে নেবো এবং আপনাদের যাদের ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি আছে তা আলাদা করে দেয়া হবে। কিন্তু তারা এই সময় দিতে নারাজ। তাদের বক্তব্য আলোচনা অনেক হয়েছে, ভূমি মন্ত্রণালয়ের চিঠি, বিভাগীয় কমিশনার স্যারের চিঠি, জেলা প্রশাসক স্যারের চিঠি আছে, আপনি এখন মেপে দিবেন।
৪) সর্বশেষ দিন, অফিসে রবিউল ইসলাম ও রাকিন বিশ্বাস এর নেতৃত্বে যারা এসেছিলেন, তাদের বলা হয়েছে, আমি বিষয়টি সমাধানের জন্য সুন্দরভাবে আগাচ্ছি, আমি এভাবেই আগাবো এবং সমাধান করবো, আপনাদের যদি মনে কোনো প্রশ্ন জাগে অবশ্যই আমার সিনিয়র স্যারদের আপনারা জানাবেন। তারা আমাকে প্রশ্ন করলে, আমি তাদেরও জানাবো আমি এভাবে কাজটি করছি। এরপর তারা চলে যান, তিন থেকে চারদিন পর এই সংবাদ সম্মেলন।

সংবাদ মাধ্যম কর্মীবৃন্দ অনেকেই এসেছেন, কথা বলেছেন, তাদেরও সবকিছু খুলে বলেছি, আজ বটিয়াঘাটা উপজেলাবাসীকেও সব বিষয় খুলে বললাম। এবার বিবেচনা আপনাদের। এই সংবাদ সম্মেলন করার পেছনের উদ্দেশ্য খুঁজে বের করার দায়িত্ব আপনাদের। আমাকে নিয়ে এই হীন প্রচারে নিয়োজিত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার দায়িত্বও আপনাদের। আপনারা কারা?
সংবাদ মাধ্যম কর্মীবৃন্দ ও বটিয়াঘাটা উপজেলাবাসী।
এই সম্পত্তি সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে সকল যৌক্তিক পদক্ষেপ আমিই নিয়েছি, চেয়ারে থাকলে এই সমস্য আমিই সমাধান করে যাবো ইনশাআল্লাহ।

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana