
এস,এম,আলাউদ্দিন সোহাগ ,পাইকগাছা ( খুলনা )
খুলনার পাইকগাছায় আষাঢ়ের টানা ভারি বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন, তলিয়ে গেছে হাজার হাজার চিংড়ি ঘের, পুকুর জলাশয়, রাস্তাঘাট ও ফসলের ক্ষেত। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ভারি বর্ষণে প্রায় ৩ হাজার ছোট বড় চিংড়ি ঘের এবং ১ হাজার পুকুর তলিয়ে গিয়ে সাড়ে ৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। অনুরূপভাবে পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে প্রায় ২’শ হেক্টর জমির কৃষি ফসল। এছাড়া পৌরসভা সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের চলাচলের রাস্তা তলিয়ে যাওযায় যাতায়াতে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের। চরম বিপাকে রয়েছেন কর্মজীবী মানুষ।
আষাঢ়ের শুরু থেকেই শুরু হয়েছে মৌসুমের বর্ষা, যা অব্যাহত রয়েছে মাস জুড়ে। বর্ষার এমন মৌসুম বিগত কয়েক বছরের মধ্যে দেখা যায়নি এমনটাই বলছেন এলাকার মানুষ। এদিকে আষাঢ়ের টানা ভারি বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপকূলীয় এ জনপদের মানুষ। দিনে রাতে বিরামহীন বৃষ্টির কারণে ব্যহত হচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন কাজ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন। উন্নয়ন সহ দিনমজুরের প্রায় সব ধরনের কাজ থমকে গেছে। যার ফলে চরম বিপাকে রয়েছেন কর্মজীবী মানুষ। বান্দিকাটী গ্রামের ইউনুস গোলদার জানান বর্ষার কারণে নিয়মিত কাজ করতে না পারায় পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। ভারি বর্ষণে হাটু পানিতে তলিয়ে বিভিন্ন এলাকার চলাচলের রাস্তা। পৌরসভার গোপালপুর, সরল, বাতিখালী, শিবাবাটী সহ অনেক এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। সরল গ্রামের মুন্না জানান উপজেলা পরিষদ ও হাসপাতাল এলাকার রাস্তায় হাঁটু পানি, এর ফলে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। ৩ নং ওয়ার্ডের ফসিয়ার রহমান বলেন বাড়ির একমাত্র যাতায়াতের রাস্তা খুড়ে রাখায় বর্ষা মৌসুমে অসংখ্য পরিবারের দুর্ভোগ বেড়েছে। ভারি বর্ষণে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে মৎস্য ও কৃষি ফসলের। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক জানান বর্তমানে উপজেলায় ২ হাজার ৮৫০ টি চিংড়ি ঘের এবং ৯’শ টি পুকুর তলিয়ে গেছে। এতে বিভিন্ন ধরনের মৎস্য ভেসে গিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একরামুল হোসেন জানান প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করতে আরো কিছু দিন সময় লাগবে। তবে ভারি বর্ষণে ৮২ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, ১১৫ হেক্টর সবজি, ১৮ হেক্টর মরিচ ও ২ হেক্টর অফসিজন তরমুজ ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে এবং বর্ষা পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ভারি বর্ষণে এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসন সহ যাতে জন দুর্ভোগ না বাড়ে এজন্য উপজেলা প্রশাসন কাজ করছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহেরা নাজনীন।