
নিউজ ডেস্ক
বুধবার (৩০ এপ্রিল), রাত ১০টার দিকে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নারী দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন ধরে “বিডিএসএম” নামধারী বিকৃত যৌনচর্চা–চক্র চালিয়ে আসার তথ্য মিলেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা অন্যতম ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হয়। সেখানে ৩০ বছর বয়সী এক পুরুষকে বাধ্য করে চাবুক দিয়ে মারধর করার সময় দুই নারীকে আটক করা হয়। অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে বিশেষ ধরনের চামড়া চাবুক, হাই হিল বুট, এবং হ্যান্ডকাফসহ আড়াই শতাধিক যৌনসামগ্রী জব্দ করা হয়।
ভাটারা থানার ওসি মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম বলেন,
“জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে, দীর্ঘদিন ধরেই তারা ‘বিডিএসএম’ নামক চক্রের আওতায় এই ধরনের বিকৃত যৌনচর্চা করত। পাচারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তারা ঢাকা ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় এ কর্মকাণ্ড ছড়িয়ে নিয়ে যেত।”
পুলিশ এখনও মূল সংগঠকদের সন্ধানে অভিযান অব্যাহত রেখেছে। আটককৃত দুই নারীর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি, অবৈধ অস্ত্র আইনে এবং মানবপাঁচনের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হবে।
পুলিশি ও আইনজীবী মন্তব্য
তত্ত্বাবধায়ক ডিআইজি (মেট্রোপলিটন) জানিয়েছেন, “যৌনসম্পর্কিত উভয় চুক্তিভিত্তিক কর্মকাণ্ডই ফৌজদারি আইনে অপরাধ; বিশেষত যেখানে মারধর বা কিছু নিয়ে মানসিক–শারীরিক হয়রানি হয়।” আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, “বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৩৬৭–এ ‘অশ্লীলতা আনা’, ৩৬৮–এ ‘জোরপূর্বক দাসত্ব’ ধারায় এ ধরনের কাজ শাস্তিযোগ্য অপরাধ।”
সামাজিক প্রতিক্রিয়া ও সতর্কতা
ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে নেটিজেনদের মধ্যে বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকে পুরুষদের অধিক সুরক্ষার দাবি তুললেও, অধিকাংশ আইনজীবী ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞই মেনে নিচ্ছেন—‘সমস্ত মানুষই আইনের পক্ষেই সুরক্ষা পাবে’।
পরবর্তী করণীয়
-
পুলিশ: মূল জাল সঞ্চালক ও কর্তার সন্ধানে অনুসন্ধান বাড়াবে।
-
আইন সংস্কার: যৌন নিপীড়ন মোকাবিলায় আইনপ্রয়োগ কারী সংস্থাগুলোকে আরও সশস্ত্র প্রশিক্ষণ ও অবকাঠামোগত সহায়তা বাড়াতে হবে।
-
সচেতনতা: পরিবার ও সামাজিক পর্যায়ে মানসিক ও শারীরিক নিপীড়ন বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর উদ্যোগ জরুরি।
মন্তব্য জানাতে বা অতিরিক্ত তথ্য পেতে যোগাযোগ
— ভাটারা থানা পুলিশ (ফোন: ০২-৯৮১২৩৪৫৬৭)
— ঢাকা মহানগর পুলিশ তথ্যকক্ষ (হেল্পলাইন: ৯৯৯)
আগামী সপ্তাহে জেলা পুলিশের বিশেষ টিম এ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে ও মামলায় আরও সংশ্লিষ্টদের নাম যুক্ত করতে পারে।