
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
জম্মু-কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও উত্তেজনার মুখে। দুই পার্শ্বের কূটনৈতিক পাল্টাপাল্টি বিবৃতির ফলে যুদ্ধের আশঙ্কা জাগছেনি, এমন নয়। ঠিক এই সময়ে চীন জরুরি ভিত্তিতে পাকিস্তানকে সামরিক সহায়তা প্রদান করে পরিস্থিতিকে আরও জটিল পর্যায়ে নিয়ে গেল।
ভারতীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম ফাস্টপোস্টের তথ্য অনুযায়ী, বেইজিং সরকার পাকিস্তানের হাতে হস্তান্তর করেছে অত্যাধুনিক পিএল-১৫ আকাশ থেকে আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে, এ মুহূর্তে এই আবির্ভাবই নয়াদিল্লির জন্য নতুন নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করেছে।
খবরের বর্ণনায় বলা হয়েছে, ২৭ এপ্রিল পাকিস্তানের বিমান বাহিনী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনটি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের ছবি শেয়ার করে, যেখানে প্রতিটি বিমানে পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র নিশ্চিতভাবে স্থাপিত ছিল। বিশেষজ্ঞদের বিচার, এই ছবি প্রকাশ অনানুষ্ঠানিকভাবেই ভারতের প্রতি শক্তি প্রদর্শন হিসেবে ধরা হচ্ছে।
জেএফ-১৭ জেটগুলোর ডিজাইন ও উৎপাদন চীন-পাকিস্তান যৌথ উদ্যোগে—এরা পাকিস্তান অভিজাত বিমানদলভুক্ত। পিএল-১৫ যোগের ফলে এ বিমানের বায়ুবিজ্ঞানিক সক্ষমতা আরও দ্বিগুণ হয়েছে বলেই মত বিশ্লেষকদের।
এ ক্ষেপণাস্ত্রটি রাডার-নিয়ন্ত্রিত সক্রিয় হোমার গাইডেড অস্ত্র; প্রায় ২০০–৩০০ কিমি দূরের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে সক্ষম। নির্মাতারা এর গতি দাবি করেন ম্যাক ৫+ (শব্দের গতির পাঁচ গুণ)। চলতি দশকে PLA এয়ার ফোর্সে ব্যবহৃত হচ্ছে পিএল-১৫, আর ২০২৩-এর ঝুহাই এয়ার শো-তেও এর উন্নত মডেল উন্মোচন করা হয়—যেখানে ভাঁজযোগ্য উইংসহ সংস্করণ প্রদর্শিত হয়। রপ্তানি সংস্করণের পাল্লাও আইনত ১৪৫ কিমি, তবে প্রতিরক্ষা সূত্রের দাবি, পাকিস্তানের কাছে থাকা মডেলের সীমানা এও ছাড়িয়ে গেছে।
ভারতের ফ্রন্টলাইন রাফাল জেট, যার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ইউরোপীয় ‘মিটিওর’ বিমানবিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র, BVR যুদ্ধক্ষেত্রে সেরা হিসেবে স্বীকৃত। বিশেষজ্ঞদের মতে, পিএল-১৫ প্রায়ই মিটিওরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হয়।
প্রাক্তন সামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বলছেন, চীন নিজস্ব কৌশলগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য ইসলামাবাদকে এইভাবে সমর্থন করছে—যেখানে সংঘাতময় পরিবেশ উপেক্ষা করা হচ্ছে না।
কাশ্মীরে হামলার পর ভারত-পাকিস্তান এখন প্রত্যক্ষ টক্করে, আর সেই মঞ্চে চীনের এই অস্ত্র সরবরাহ দুই পারমাণবিক পার্শ্বপ্রতিনিধির মধ্যকার উত্তেজনা আরও বাড়াবে বলে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন। ইউরেশিয়ান টাইমস এবং ‘ক্ল্যাশরিপোর্ট’ প্রতিরক্ষা বিশ্লেষণ অনুসারে, ভবিষ্যতেও বেইজিং ইসরামাবাদকে আরও উন্নত হুইপন সিস্টেম দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের পরামর্শ, পাকিস্তান এখন আকাশযুদ্ধে ভারতকে চ্যালেঞ্জ করার ধাপ এগিয়ে চলেছে; তাই ভারতের উচিত তার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও সুদৃঢ় করা এবং আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সঙ্গে কৌশলগত সহযোগিতা বাড়ানো।