সর্বশেষ:

iter-vatay-kajer-jonno-rawna-dicche-hazar-hazar-shromik

পাইকগাছা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক কাজের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলার ইটভাটায় রওয়ানা দিচ্ছে

iter-vatay-kajer-jonno-rawna-dicche-hazar-hazar-shromik
Facebook
Twitter
LinkedIn

পাইকগাছা ( খুলনা ) প্রতিনিধি

 

এলাকায় কাজের অভাবে পাইকগাছা থেকে হাজার হাজার শ্রমিক কাজের জন্য দেশের বিভিন্ন জেলার ইট ভাটায় রওয়ানা দিচ্ছে। অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বর্তমানে পণ্যের মূল্য ক্রমাগত বাড়ছে। ফলে নিম্নআয়ের জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নিজ এলাকায় কাজের অভাব ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির ফলে নিম্নআয় সম্পন্ন মানুষ ছাড়াও মধ্যবিত্তরাও তাদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে। সংসারের খরচ বহন করতে ইটভাটায় অমানবিক শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের কাজ করতে হয় শ্রমিকদের। অভাবের তাড়নায় তারা ইটভাটায় কাজ করে। বাধ্য হয়ে তারা ইট পোড়ানো ভাটা শ্রমিকের পোড়া জীবন কাটান।

প্রতিদিন বাস-ট্রাকযোগে দেশের বিভিন্ন জেলার ইট ভাটায় কাজ করতে পরিবার পরিজন নিয়ে রওনা দিচ্ছে। ইট ভাটার শ্রমিকরা জানান, নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ইট বানানোর কাজ করতে হয় তাদের। আর এই কাজটি চুক্তিতে হয়ে থাকে। ভাটায় কাজ করতে আসতে হয় সর্দারের মাধ্যমে। পুরো ৬ মাসের জন্য সর্দারই শ্রমিকের সঙ্গে চুক্তি করেন। কাজ শুরু হওয়ার আগে সর্দার কিছু টাকা অগ্রীম দিয়ে শ্রমিককে দাদন দিয়ে রাখেন। ইট বানানোর কারিগরদের দেওয়া হয় সবচেয়ে বেশি টাকা। ৬ মাসের জন্য কারিগর প্রতিদিন ১৬-১৭ ঘন্টা কাজ করে ১ লাখ, জোগালি ৪৫ হাজার, আগাটক ৮০ থেকে ৯০ হাজার, গোড়ারটক ৭০ থেকে ৮০ হাজার এবং মাটি বহনকারী ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা পেয়ে থাকেন। আবার প্রতিদিন কাজ শেষে দেওয়া হয় খোরাকি। সাতদিনে এই খোরাকি জনপ্রতি শ্রমিক পান ৩০০-৫০০ টাকা করে।

শ্রমিকরা জানান, দুই শিফটে কাজ করতে হয় তাদের। ফজরের আযানের পর পরই শুরু হয় তাদের কর্মজীবন। চলে দুপুর পর্যন্ত। সামান্য বিরতি দিয়ে সন্ধ্যা ৭-৮ টা পর্যন্ত তাদের কাজ চলে। তাদের মাঝে ভাগ করে কয়েকজন দিনে কয়েকঘন্টা বিশ্রামের সুযোগ পান। বিনিময়ে তাদের কাজ চলে সারা রাত। ভাটার পাশেই টিনের ঘর তুলে তাদের থাকার ব্যবস্থা করেন ভাটা মালিক। সেখানে নিজেরা তিনবেলা রান্না করে খাবারের ব্যবস্থা করেন।

ইট ভাটাগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, কেউ মাটি কাটছেন। কেউ সেই মাটি এনে এক বিভিন্ন যায়গায় জড়ো করছেন। আবার কেউ সেই মাটি কাটের ছাঁচে ভরে ইটের আকারে সাজিয়ে যাচ্ছেন। রোদে পুড়ে সেই ইট শক্ত হলে কেউ কেউ তা ভ্যানে করে একস্থানে জড়ো করছেন। তারপর সেখান থেকে কয়েকজন কয়লার ভাটায় ছেড়ে ইট পুড়ছেন। এরপর সেই ইট জড়ো করা হচ্ছে বিক্রির জন্য। পুরুষদের পাশাপাশি নারী ও শিশুদেরও কাজ করতে দেখা যায় এই সকল ইট ভাটায়।

ইটভাটার শ্রমিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা জানান, অভাবের তাড়নায় নিজ এলাকা ছেড়ে কাজের সন্ধানে দূর-দূরান্তে যেতে হয়। এ কারণে তারা তাদের সন্তানদের স্কুলে দিতে পারেন না। সারাদিনই কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে সন্তানদের আর বিদ্যালয়ে নেওয়ার সুযোগ থাকে না। ভটায় ছয় মাস থাকে। তারপর চলে যায়। তারা যখন যেখানে যায় সংসারের সব জিনিসপত্র নিয়ে সবাই একসঙ্গে যায়। আবার যখন বাড়িতে ফিরে যায়, তখন সব নিয়েই যায়।

বছরের ৬ মাস ভাটাগুলোতে পুরোদমে কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে হয় তাদের। আর বাকি ৬ মাস কেউ খেতে ও চিংড়ির ঘেরে কাজ করে। আবার কেউ বা রিক্সা, ভ্যান, ভাড়ায় অটোরিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। আবার অনেকে বেছে নেন রাজমিস্ত্রির জোগালি কিংবা দিনমজুরির কাজ।এভাবেই বছরের পর বছর তারাইট ভাটায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn

সর্বশেষ খবর

turan hossain rana